বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশের অন্যতম বৃহৎ এবং সম্মানিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান টাটা গ্রুপের (Tata Group) জন্য চলতি মাসটি অত্যন্ত অস্থিরতার মধ্যে কাটছে। ২০১৬ সালে সাইরাস মিস্ত্রিকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণের ঘটনা এখনও মানুষের মনে তাজা। আর এখন, আরেক “মিস্ত্রি”-র বেরিয়ে যাওয়ার খবর কর্পোরেট জগতে আলোড়ন ফেলেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, প্রয়াত রতন টাটার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিবেচিত মেহলি মিস্ত্রিকে এবার টাটা ট্রাস্ট থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তটি টাটা সন্সের হোল্ডিং কোম্পানিগুলি অর্থাৎ স্যার রতন টাটা ট্রাস্ট (SRTT) এবং স্যার দোরাবজি টাটা ট্রাস্ট (SDTT) -এ একটি বড় ধরনের অস্থিরতার ইঙ্গিত দিয়েছে। যেখানে মেহলির মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
টাটা ট্রাস্টে (Tata Group) চরম অস্থিরতা:
মেহলি মিস্ত্রিকে কীভাবে অপসারণ করা হচ্ছে: মূলত, গত শুক্রবার, টাটা ট্রাস্টের (Tata Group) সিইও সিদ্ধার্থ শর্মা মেহলি মিস্ত্রির মেয়াদ ৩ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন। ইকোনমিক টাইমসের একটি রিপোর্ট অনুসারে, ট্রাস্টি দারিয়াস খাম্বাট্টা, প্রমিত ঝাভেরি এবং জাহাঙ্গীর জাহাঙ্গীর এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিলেন। তবে, নোয়েল টাটা (রতন টাটার সৎ ভাই), টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ভেনু শ্রীনিবাসন এবং ট্রাস্টি বিজয় সিং প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন। যার ফলে কার্যকরভাবে মিস্ত্রির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।

“অক্টোবর”-এর কাকতালীয় ঘটনা: জানিয়ে রাখি যে, এটা একটা অদ্ভুত কাকতালীয় ঘটনা যে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসেই মেহলি মিস্ত্রিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই মাসেই তাঁর খুড়তুতো ভাই সাইরাস মিস্ত্রিকে নাটকীয়ভাবে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাইরাস মিস্ত্রি শাপুরজি পালোনজি গ্রুপের সদস্য ছিলেন। যার টাটা সন্সে ১৮.৩৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। মেহলিও একই পরিবারের একজন খুড়তুতো ভাই। এদিকে, গত বছরের অক্টোবর মাসেই প্রয়াত হয়েছিলেন রতন টাটা। এমতাবস্থায়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসটিও টাটা গ্রুপের (Tata Group) জন্য যথেষ্ট অস্থিরভাবে অতিবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মহিলা বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল খেলতে পারবে না ভারত? এই একটা কারণেই বাড়ছে চিন্তা
মেহলি মিস্ত্রি কে: উল্লেখ্য যে, টাটা গ্রুপের (Tata Group) প্রধান হোল্ডিং কোম্পানি টাটা সন্সে টাটা ট্রাস্টের ৬৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই ট্রাস্টের মধ্যে ২ টি প্রধান ট্রাস্ট রয়েছে: স্যার দোরাবজি টাটা ট্রাস্ট (SDTT) এবং স্যার রতন টাটা ট্রাস্ট (SRTT)। যাদের একসঙ্গে টাটা সন্সে ৫১ শতাংশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এর সহজ অর্থ হল এই ট্রাস্টগুলির সিদ্ধান্তগুলি টাটা গ্রুপের দিকনির্দেশ নির্ধারণ করে।
আরও পড়ুন: শ্রেয়সের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন? বড় আপডেট দিলেন সূর্যকুমার যাদব
মেহলি মিস্ত্রির বিষয়ে জানাতে গেলে বলতে হয়, তিনি এম. পালোনজি গ্রুপ অফ কোম্পানিজের প্রোমোটার। এই গ্রুপটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্টিং, শিপিং, ড্রেজিং এবং গাড়ির ডিলারশিপ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে। টাটার বেশ কয়েকটি কোম্পানি তাঁর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অথবা অংশীদার ছিল। তিনি ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল ট্রাস্টের একজন ট্রাস্টিও। তাঁর সম্পর্ক কেবল ব্যবসায়িক ছিল না; বরং, তাঁকে প্রয়াত রতন টাটার ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হত। উল্লেখ্য যে, রতন টাটার মৃত্যুর পর থেকেই ট্রাস্টের মধ্যে বিভিন্ন কোন্দল সামনে আসছে। সূত্র আরও জানিয়েছে যে, টাটা গ্রুপের (Tata Group) কিছু শীর্ষ আধিকারিক সম্প্রতি বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের দুই সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন।













