বাংলাহান্ট ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রবিবার আবারও “মন কি বাত” (Mann Ki Baat) কর্মসূচির মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখলেন। এটি ছিল তাঁর জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠানের ১২৭ তম পর্ব। এদিনের আলোচনার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ছট মহাপর্বের প্রসঙ্গ তোলেন এবং দেশবাসীকে উৎসবের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, ছট শুধুমাত্র এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও সমাজের এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনের প্রতীক। মোদীর কথায়, “যদি সুযোগ পান, একবার অন্তত ছট উৎসবে অংশ নিন। এই উৎসব ভারতের ঐক্যের সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণ।”
১২৭তম মন কি বাত (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা মোদীর
এদিন মন কি বাত (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব ছোট পুজোর মাহাত্ম্য নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ছটের ঘাটে সমাজের সব শ্রেণির মানুষ একত্রিত হন—ধর্ম, বর্ণ, ভাষার ভেদাভেদ ভুলে সকলে একসঙ্গে প্রার্থনা করেন সূর্যদেব ও প্রকৃতির উদ্দেশে। এই দৃশ্যই ভারতের সামাজিক ঐক্যের প্রকৃত প্রতিফলন।
এরপর তিনি চায়ের পাশাপাশি এবার “কফি”-র কথাও উল্লেখ করেন। মোদী বলেন, “আপনারা জানেন, চায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক কতটা গভীর, কিন্তু আজ ভাবলাম, কফি নিয়েও কিছু কথা বলা যাক।” অনুষ্ঠানে (Mann Ki Baat) তিনি ওডিশার কোরাপুট জেলার কফির বিশেষ স্বাদ ও সেখানকার কৃষকদের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে কোরাপুট কফির জনপ্রিয়তা, যা শুধু ভারতের মধ্যেই নয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের কফি এখন আন্তর্জাতিকভাবে নিজের স্থান তৈরি করছে—চিকমঙ্গলুর, কুর্গ, হোসন, তামিলনাড়ুর নীলগিরি ও অন্নামালাই, কিংবা কেরালার ওয়ানাড ও মালাবার—সব অঞ্চলের কফির স্বাদ অনন্য।
এরপর অনুষ্ঠানে (Mann Ki Baat) মোদী “অপারেশন সিঁদুর”-এর কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই অভিযান প্রতিটি ভারতীয়কে গর্বিত করেছে। একসময় যে অঞ্চলে মাওবাদী সন্ত্রাসের ছায়া ছিল, সেখানে আজ আলো জ্বলছে, মানুষ শান্তির পথে ফিরছে।”
সম্প্রতি ২য় বারের জন্য দেশের জিএসটিতে সংস্করণ এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। জিএসটি 2.0- র ফলে দেশবাসী কতটা লাভবান হয়েছেন মন কি বাত (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠানে সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। জিএসটি সেভিংস উৎসবের প্রতিও জনগণের আগ্রহের কথা জানান এবং বলেন যে, উৎসবের মরশুমে দেশজ ও স্বদেশি পণ্যের ক্রয় আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। খাদ্যতেল ব্যবহারে ১০ শতাংশ হ্রাসের তাঁর আহ্বানেও জনগণ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
এর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে (Mann Ki Baat) বেঙ্গালুরুর “লেক সিটি” উপাধি নিয়ে তিনি বলেন, “ইঞ্জিনিয়ার কপিল শর্মা ও তাঁর দল ৪০টি কূপ ও ৬টি হ্রদের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছেন। তাঁরা কর্পোরেশন ও স্থানীয় জনগণকে যুক্ত করে শহরের পরিবেশে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছেন।”

আরও পড়ুন:ফের দাম বাড়ছে সোনা-রুপোর, রবিবার বাজারে ১০ গ্রাম হলুদ ধাতুর দর কত?
অন্যদিকে মন কি বাত (Mann Ki Baat) অনুষ্ঠানে আরো একটি গুরুত্ধাবপূর্ণ দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশীয় জাতের কুকুর ব্যবহারের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি জানান, বিএসএফ ও সিআরপিএফ এখন দেশীয় জাতের কুকুর অন্তর্ভুক্ত করছে, যা ভারতীয় পরিবেশে বেশি উপযোগী। পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধারের ইতিবাচক প্রভাবের কথাও তিনি উল্লেখ করেন—“এতে ডলফিন, কাঁকড়া, এবং বহু জলজ প্রাণীর সংখ্যা বেড়েছে, একই সঙ্গে স্থানীয় মৎস্যজীবীরাও লাভবান হচ্ছেন।”
অনুষ্ঠানের (Mann Ki Baat) শেষে প্রধানমন্ত্রী ভারতের “আয়রন ম্যান” সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের অবদান স্মরণ করিয়ে ৩১ অক্টোবর তাঁর জন্মদিনে “রান ফর ইউনিটি”-তে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। তার পাশাপাশি তিনি বলেন, “‘বন্দেমাতরম’ শব্দটি শুধু দেশপ্রেমের প্রতীকই নয়, মাতৃভূমির প্রতি আমাদের কর্তব্যেরও প্রতীক।” প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৭ নভেম্বর “বন্দেমাতরম”-এর ১৫০তম বর্ষ উদ্যাপিত হবে, যার প্রথম সুর তোলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯৬ সালে। মোদীর কথায়, “এই সুর ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে একতার শক্তিতে বাঁধে।”













