বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত অক্টোবর মাসের খুচরো মুদ্রাস্ফীতির তথ্য ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (Reserve Bank Of India) জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) ভিত্তিক খুচরো মুদ্রাস্ফীতি ৬.২১ শতাংশে পৌঁছেছে। যা গত ১৪ মাসে সর্বোচ্চ স্তর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই পরিসংখ্যান RBI-এর লক্ষ্যমাত্রার ২ থেকে ৬ শতাংশের বাইরে চলে গিয়েছে। যার কারণে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে RBI-এর ওপর চাপ আরও বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে আগামী মনিটরি পলিসি কমিটির বৈঠকে কি সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে RBI?
কি পদক্ষেপ নেবে RBI (Reserve Bank Of India):
ডিসেম্বরে বৈঠক হওয়ার কথা: জানিয়ে রাখি যে, RBI (Reserve Bank Of India)-এর মনিটারি পলিসি কমিটির (এমপিসি) পরবর্তী বৈঠক আগামী ডিসেম্বরে সম্পন্ন হবে। যেখানে নীতিগত সুদের হারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে, দুর্বল অর্থনীতিকে শক্তি দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা এবং বাজারের অবস্থা আগামী ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর আশা করেছিল। কিন্তু, মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছনোর পর এই সম্ভাবনা ধাক্কা খেয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতি RBI-এর চিন্তা বাড়িয়েছে: অক্টোবরে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির বৃদ্ধি কেবল অপ্রত্যাশিতই ছিল না, বরং এটি RBI (Reserve Bank Of India)-এর জন্য একটি বড় মাথাব্যথাও হয়ে উঠেছে। বিশ্বব্যাপী, আমেরিকা, ইউরোপ, চিন এবং অন্যান্য উন্নত অর্থনীতিতে সুদের হারের হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এই বছর কয়েকবার সুদের হার কমিয়েছে। অপরদিকে, ভারতে মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধির কারণে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: মাছ ধরতে গিয়ে বিরাট কেলেঙ্কারি! জালে উঠল পারমাণবিক সাবমেরিন, শুরু তুমুল হইচই
গভর্নরের সামনে রয়েছে চ্যালেঞ্জ: এদিকে, RBI (Reserve Bank Of India)-এর গভর্নর শক্তিকান্ত দাস ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন যে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাথমিক লক্ষ্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। যখন মুদ্রাস্ফীতির হার ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তখন RBI সাধারণত সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়। এটি বাজারে নগদ প্রবাহ হ্রাস করে এবং চাহিদা কমায়। যা মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে অর্থনীতি ইতিমধ্যেই মন্দার সম্মুখীন। অটোমোবাইল সেক্টর এখন বিক্রয় হ্রাসের সাথে লড়াই করছে। অপরদিকে, FMCG কোম্পানিগুলির আর্থিক ফলাফলও হ্রাসের ইঙ্গিত দিয়েছে। শেয়ার বাজারেও দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, সুদের হার কমানোর প্রয়োজন অনুভূত হয়েছিল। যাতে বাজারে নগদ প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং চাহিদা উৎসাহিত হয়।
আরও পড়ুন: আর নেই চিন্তা! এবার মধ্যবিত্তদের আসছে সুদিন, কি জানালেন অর্থমন্ত্রী?
কি সিদ্ধান্ত নিতে পারে RBI: জানিয়ে রাখি যে, ডিসেম্বরের বৈঠকে RBI (Reserve Bank Of India)-এর সুদের হারের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার একটি উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে তা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, RBI আপাতত বিদ্যমান হার বজায় রাখতে পারে। যেমনটি গত ১০ বার হয়েছে।