বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ নজির বিহীন রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) এজলাস থেকে সরিয়ে নেওয়া হল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা। গত বছর একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যে নিয়োগ মামলা তিনি শুনছিলেন, তা নিয়েই কথা বলেছিলেন সাক্ষাৎকারে। সেই নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে।
কী বলল সুপ্রিম কোর্ট? এদিন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে জানান, বিচারপতিরা কোনও ভাবেই তাঁদের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন না। উনি যদি সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি ওই মামলা শোনার অধিকার হারিয়েছেন। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মামলা শোনার অধিকার হারালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কী বলেছিলেন সেদিনের সাক্ষাৎকারে? বিচারপতি সেই সাক্ষাৎকারে পরিষ্কার জানান, স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘মুড়িমুড়কি’র মতো দুর্নীতি হয়েছিল। তাই তাঁকে মুড়িমুড়কির মতো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এত দুর্নীতি জীবনেও কল্পনা করতে পারি না।’ এই নিয়োগে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে ভাবে কোর্টে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পেশ করেছিল, তা থেকেই যে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এসেছিল, তা-ও জানিয়েছিলেন তিনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। সেই প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের চাকরি যাবে। ধরতে পারলেই চাকরি যাবে। তাঁরা যেন নিশ্চিন্তে না থাকেন।’ ‘বেআইনি পথে’ নিযুক্তদের সম্পর্কে বিচারপতির মন্তব্য, ‘এঁরা কী শেখাবেন? এঁরা তো স্কুলে টুকতে সাহায্য করবেন!’
কী দাবি বিচারপতির? ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী বিচারপতিরা সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন না। যদিও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়ে ভুল করেননি, তা-ও জানিয়েছিলেন পরবর্তীকালে। তাঁর দাবি, ‘বিচারপতিরা কী করতে পারেন এবং কত দূর যেতে পারেন, তা ব্যাঙ্গালোর প্রিন্সিপল-এ স্পষ্ট করা আছে। বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারপতিরও বাক্স্বাধীনতা আছে।’