‘সো কল্ড বিশ্বকবি, ব্রিটিশদের চাটুকার!’ রবীন্দ্রনাথকে নিয়েও মাত্রাছাড়া বাংলাদেশি নোবেল

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাঙালি বাংলা ক্যালেন্ডারের অন্যান্য দিনগুলো মনে রাখুক বা না রাখুক, আজকের দিনটা ভুলে যাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। আজ যে ২৫ শে বৈশাখ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) জন্মদিন। প্রতিটি বাঙালি পরিবারে ছোট থেকেই শেখানো হয় এই দিনটার মাহাত্ম্য। পরিচয় করানো হয় কবিগুরুর জীবন, তাঁর অবদানের সঙ্গে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে পরিচিতির পরিসর। শুধু ভারতে নয়, ওপার বাংলাতেও সমাদৃত কবিগুরু। কিন্তু বিশ্বকবি, নিজের দেশের জাতীয় সঙ্গীতের স্রষ্টাকেই অপমান করতে ছাড়েননি সঙ্গীতশিল্পী নোবেল (Noble)।

মইনুল আহসান নোবেল। বাংলাদেশি এই সঙ্গীতশিল্পীর সঙ্গে এপার বাংলার মানুষের পরিচয় হয় জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা’র দৌলতে। শোতে নিজের কণ্ঠ, গায়কী দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছিলেন নোবেল। প্রথম তিনে জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই নোবেল শো শেষে নিজের দেশে ফিরতেই শুরু হয় তাঁর ভোলবদল।

noble

একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে তাঁর বিরুদ্ধে। নারীসঙ্গ থেকে শুরু করে মাদক সেবন একের পর এক গুরুতর অভিযোগে জর্জরিত হয়ে হারিয়ে যেতে থাকেন পুরনো নোবেল। এরপরেই শুরু হয় ভারত সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্য করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কলকাতা, এমনকি যে শো থেকে তাঁর এত জনপ্রিয়তা সেই শো সম্পর্কেও কুরুচিকর মন্তব্য করতে ছাড়েননি অকৃতজ্ঞ নোবেল।

কিন্তু মানুষের সহ্যের সীমা ছাড়ায় যেদিন তিনি স্বয়ং কবিগুরুকে অপমান করে বসেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলটপকা মন্তব্য করার জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত নোবেল। তাঁর এসব মন্তব্যের জন্য বিতর্কও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে বারবার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়েও তাঁর পোস্ট শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়েছিল।

কী লিখেছিলেন নোবেল? নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ-নজরুল তো আর নবী কিংবা দেবতা না যে তাদের গান প্যারোডি আকারে গাওয়া যাবে না! যে রবীন্দ্রনাথ এদেশের কবিদের মূল্যায়ন করে যাই নাই তারে নিয়ে যে এদেশে চর্চা হয় এটাই রবীন্দ্রনাথের জন্য বেশি। তাছাড়া বাংলাদেশের সাহিত্যে যেহেতু রবীন্দ্রনাথের অবদান নিতান্তই কম, নেই বললেই চলে, সেক্ষেত্রে তার গান এদেশের কেউ যদি প্যারোডি আকারে গায় সেটা রবীন্দ্রনাথের জন্যই মঙ্গলজনক।’

আসলে সে সময়ে বাংলাদেশের পরিচিত মুখ হিরো আলমের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রসঙ্গীত বিকৃত করে গাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কবিগুরুকেই অপমান করেছিলেন নোবেল। এখানেই থামেননি তিনি।

Noble rabindranath

নিজের সীমা অতিক্রম করে তিনি লিখেছিলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তাঁর রাবীন্দ্রিক সাহিত্যচর্চা অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে বয়কট করা হউক। আমাদের জাতীয় কবি নজরুল! বিদ্রোহী কবি; যখন আমাদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ছিলেন। রোজ রোজ ব্রিটিশদের কাছে কারাবন্দী হতেন, কনডেম সেলে টর্চারের শিকার হচ্ছিলেন, তখন বিরিটিশদের চাটুকারিতা করে সো-কল্ড বিশ্বকবি বিন্দাস আমাদের বাপ-দাদার রক্ত চুষে খাচ্ছিলো।’

নোবেলের এই মন্তব্য বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছিল দুই দেশেই। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কিছু মানুষের সমর্থন পেলেও অনেকেই দাবি করেছিলেন, রবিঠাকুরকে অপমান করে আসলে নিজের দেশেরই অপমান করেছেন নোবেল। এক বছর কেটে গেলেও বাংলাদেশি গায়কের স্পর্ধা ভোলেনি আমজনতা।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর