বাংলাহান্ট ডেস্ক: এই বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার (Nobel Peace Prize) নিয়ে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এবারও তাঁর স্বপ্ন ভাঙল— নোবেল কমিটি শান্তির পুরস্কার দিয়েছে ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে। মাচাদোকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে দেশে চলা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মানবাধিকার রক্ষার প্রচেষ্টার জন্য। নোবেল কমিটির মতে, মাচাদো ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়ে ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর উদাহরণ দেখিয়েছে যে পরিবর্তন আনতে সহিংসতা নয়, দৃঢ় সংকল্পই যথেষ্ট।
ট্রাম্প নোবেল (Nobel Peace Prize) না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হোয়াইট হাউস
অন্যদিকে, ট্রাম্পের নোবেল (Nobel Peace Prize) না পাওয়ায় মার্কিন হোয়াইট হাউস প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সারা বিশ্বে শান্তি চুক্তি এগিয়ে নেওয়া, যুদ্ধ বন্ধ করা এবং মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য অবিরাম কাজ চালিয়ে যাবেন। বিবৃতিতে বলা হয়, “রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের হৃদয়ে একজন সত্যিকারের মানবতাবাদের মন আছে। তাঁর ইচ্ছাশক্তি এতই প্রবল যে তিনি পাহাড়ও নাড়িয়ে দিতে পারেন।” হোয়াইট হাউসের মন্তব্যে আরও বলা হয়, “নোবেল কমিটি প্রমাণ করেছে যে তারা শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়।”
আরও পড়ুন: ব্যর্থতা ভুলে মনের জোরেই স্বপ্নপূরণ! বিদেশের চাকরি ছেড়ে হলেন IAS, অবাক করবে মনুজের কাহিনি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ এই মন্তব্যকে নোবেল (Nobel Peace Prize) কমিটির বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ বলে মনে করছেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন যে, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ায় তাঁর নেতৃত্বে হওয়া শান্তি প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে উপেক্ষা করা হয়েছে। তাদের দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতের সমাধানে ট্রাম্পের ভূমিকা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও বহুবার প্রকাশ্যে বলেছেন যে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের (Nobel Peace Prize) যোগ্য। তাঁর মতে, আমেরিকার নেতৃত্বে ইসরায়েল, আরব দেশ এবং এশিয়ার কিছু অঞ্চলে শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতা তাঁর অন্যতম বড় কৃতিত্ব। তবে ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩১ জানুয়ারি ২০২৫। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন ২০ জানুয়ারি ২০২৫-এ, অর্থাৎ মনোনয়ন বন্ধ হওয়ার মাত্র ১১ দিন আগে। এত অল্প সময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার মতো বড় উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ তাঁর ছিল না।
আরও পড়ুন চাপ বাড়ল পাকিস্তানের? জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর! কী নিয়ে হল আলোচনা?
অন্যদিকে, মারিয়া কোরিনা মাচাডোর শান্তিপূর্ণ লড়াই আন্তর্জাতিক মহলে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। বহু বছর ধরে তিনি ভেনেজুয়েলায় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মুখ। নোবেল কমিটি তাঁর কাজকে মানবতার পক্ষে এক সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সব মিলিয়ে, নোবেল পুরস্কার (Nobel Peace Prize) নিয়ে ট্রাম্পের দাবি ও হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। তবে শান্তির মঞ্চে এ বছর জয়ী হয়েছেন সেই নেত্রী, যিনি বন্দুক নয়, বিশ্বাস ও গণতন্ত্রের শক্তিতে দেশের পরিবর্তন আনতে লড়ছেন।