বাংলা হান্ট ডেস্ক: একদম প্রাচীন কালে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার জন্য পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করত মানুষ। এমনকি, দূরের গন্তব্যের ক্ষেত্রেও পায়ে হাঁটা ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না। পরবর্তীকালে, চাকার আবিষ্কার হওয়ার পর বিভিন্ন গাড়ি এবং জলপথে নৌকোর মাধ্যমে চলতে যাতায়াত। তবে, যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে সবকিছুই। এমতাবস্থায়, বর্তমান আধুনিক যুগে ক্রমশ গতিশীল হচ্ছে পরিবহণ ব্যবস্থা। এদিকে যার ওপর ভর করে এই গতিশীলতা বজায় থাকছে তা হল জ্বালানি (Fuel)। বর্তমানে অধিকাংশ গাড়ির ক্ষেত্রেই পেট্রোলের (Petrol) ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে পেট্রোল কে আবিষ্কার করেছেন?
হ্যাঁ, প্রথমে প্রশ্নটি আপনাকে কিছুটা চমকে দিলেও এই সংক্রান্ত আসল তথ্য অধিকাংশজনই জানেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পেট্রোল সরাসরি প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। এটি অপরিশোধিত তেল থেকে পৃথক করা হয়। এদিকে, অপরিশোধিত তেল উচ্চ চাপ এবং তাপমাত্রায় উদ্ভিদ এবং প্রাণীর অবশিষ্টাংশের কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে পচে যাওয়ার পরে গঠিত হয়। যানবাহনে ব্যবহৃত হওয়ার বহু বছর আগে, অপরিশোধিত তেল আলো এবং ওষুধে ব্যবহৃত হত।
শুরু হয় চিনে:
এদিকে, যদি আমরা পেট্রোলের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে কথা বলি, সেক্ষেত্রে ৩৪৭ AD-তে চিনে প্রথম কূপ খনন করা হয়েছিল। সেখান থেকে তেল উত্তোলন করা হত। এরপরে, ৬০০ BC-তে, ব্যাবিলনীয়রা এক ধরণের অপরিশোধিত তেল ব্যবহার করে একটি প্রাচীর তৈরি করে। এদিকে, ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, পার্সিয়ানরা আলো এবং কোনোকিছু গরম করার জন্য এই তেল ব্যবহার করত। তবে, আধুনিক যুগের কথা যদি বলি, সেক্ষেত্রে ঊনবিংশ শতাব্দীতে নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল আলাদা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পকেটে পড়বে টান! নতুন বছরেই লাফিয়ে দাম বাড়ছে গাড়ির, জানিয়ে দিল মারুতি-টাটা-মাহিন্দ্রা
এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসা:
১৮৫৯ সালে, পেনসিলভেনিয়ায় বসবাসকারী এডউইন ড্রেক প্রথম বাণিজ্যিক তেলের কূপ খনন করেন। এরপর সেখান থেকে পেট্রোল এক্সট্রাক্ট করা হয়। এরপরই এই প্রথার শুরু হয় আমেরিকা, রাশিয়া, কানাডা, মেক্সিকো, ভেনিজুয়েলা এবং ইরানে। অপরিশোধিত তেল থেকে কেরোসিন, পেট্রল, ডিজেল এবং জেট ফুয়েল উত্তোলনও শুরু হয়। ১৮৫৩ সালে, স্যামুয়েল কিয়ার পিটসবার্গে প্রথম তেল শোধনাগার নির্মাণ করেন।
সেখানে বিভিন্ন তাপমাত্রায় অপরিশোধিত তেল থেকে একাধিক জিনিস পাওয়া যায়। যেখান থেকে উৎপাদিত গ্যাসোলিন সবচেয়ে মূল্যবান হিসাবে বিবেচিত হত। ১৮৮৫ সালে, এই গ্যাসোলিনে চলমান প্রথম গাড়ি তৈরি হয়েছিল। যা জার্মানিতে ব্যবহৃত হয়। এরপরে, বিপ্লব আসে এবং ১৯২০ সাল নাগাদ, শুধুমাত্র আমেরিকাতেই রাস্তায় ৯ মিলিয়নেরও বেশি গাড়ি দেখা যায়।