বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্যেই যেকোনো মুহূর্তেই ঘোষণা হতে পারে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন। ৩০০ আসনের এই নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর। দীর্ঘদিন পর এবার প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চারজন নতুন নেতৃত্ব, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অনন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সরকার গঠনের জন্য ১৫১টি আসনে জয়লাভ অপরিহার্য হওয়ায় প্রতিটি দলের লক্ষ্য এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন।
বাংলাদেশের (Bangladesh) আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে চার প্রতিদ্বন্দ্বী:
এবারের নির্বাচনে তিনটি প্রধান ফ্রন্টকে ঘিরেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশের (Bangladesh) সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন, যা রাজনীতিকে সম্পূর্ণ নতুন রূপ দিয়েছে। দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপির নেতা তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী পদের শীর্ষ দাবিদার হিসেবে উঠে এসেছেন। লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করলেও তিনিই দলের প্রধান কৌশলগত নির্দেশনা দিচ্ছেন। সাম্প্রতিক জরিপে বিএনপির পাকাপোক্ত অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে, ফলে ভোটের ফলাফল সেই ট্রেন্ড ধরে রাখলে ২০০১ সালের পর আবারও খালেদা জিয়ার পরিবারের কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে পারেন।

আরও পড়ুন:ভারতের ওপর ফের শুল্ক চাপানোর পরিকল্পনা! ‘টপ কালপ্রিট’ আখ্যা দিয়ে কারণ জানালেন ট্রাম্প
তারেক রহমানের পাশাপাশি তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও আলোচনায় রয়েছেন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। দলের ভেতরে অনেকে মনে করেন, যদি আইনি বা রাজনৈতিক জটিলতার কারণে তারেক সরাসরি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, তবে জুবাইদা সেই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা, প্রশাসন ও সংগঠনে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সক্রিয়তা তাঁকে আরও এগিয়ে রেখেছে। ঢাকায় অবস্থান করে তিনি নিয়মিত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনীতিতে গত তিন দশক ধরে নারীদের প্রভাব থাকায় তার সম্ভাবনাও অস্বীকার করা যাচ্ছে না।

এদিকে শেখ হাসিনার পতনের পর জোয়ার এসেছে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে। দলের তরফ থেকে আমির শফিকুর রহমানকে এবার বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রী পদের একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখা হচ্ছে। জামায়াত ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা সবকটি আসনেই এককভাবে প্রার্থী দেবে। ধর্মভিত্তিক ইস্যু নিয়েই নির্বাচনী প্রচারে নামতে চায় এই দল। তবে অতীতের বিতর্ক, বিশেষ করে আন্দোলন-সংকটের সময় তাদের ভূমিকা, ভোটারদের একটি বড় অংশের মনে সংশয় তৈরি করেছে, যা তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন: জেলে থেকেও দাপট! শাহজাহানের ‘দাপটে’ আতঙ্কে সরবেড়িয়ার মণ্ডল পরিবার
চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী নাহিদ ইসলাম, যিনি শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি আন্দোলনে অন্যতম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পূর্বে তিনি তৃতীয় ফ্রন্ট ঘোষণা করেন এবং আরও সাতটি দলকে নিয়ে গঠন করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। যুব নেতৃত্বের প্রতীক নাহিদ ইসলামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে এবং বহু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁর দল কিংমেকারের অবস্থানে যেতে পারে। আর যদি সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে তিনিও প্রধানমন্ত্রী পদে দাবি তুলতে পারেন। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, বাংলাদেশের (Bangladesh) নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ ততই জটিল এবং অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।













