বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তিনি। একসময় শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। দাপিয়ে বেড়াতেন গোটা বীরভূম। ইডি, গরু পাচার মামলার চাপে সেই কেষ্টরই এখন নাজেহাল অবস্থা। শুধুমাত্র বোলপুরের পৈতৃক বাড়ি বাদে বুধবার অনুব্রতের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)।
এরপর থেকেই একাধিক বিষয়ে জোর চৰ্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেষ্টর ঘনিষ্ঠ-বৃত্তে থাকা অনেকেই আবার বলছেন নিজের এই দুঃসময়ে দলকে সে-ভাবে পাশে পাচ্ছেন না নেতা। গরু পাচার মামলায় অনুব্রতর প্রথম সারির সব আইনজীবীর খরচই কে বা কারা জোগাবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, বর্তমানে আসানসোল, কলকাতা হাই কোর্ট, দিল্লির আদালতে অনুব্রতের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। অন্যদিকে, সম্প্রতি গরু পাচার মামলায় তদন্তে অসহযোগিতার অভাবে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। ফলে দিল্লি আদালতে যুক্ত হয়েছে সুকন্যা মামলাও। বর্তমানে বাবা-মেয়ে দুজনাই বন্দি রয়েছেন তিহাড়ে।
গতবছর আগস্ট মাসে গ্রেফতার হওয়া থেকে শুরু করে এত দিন আদালতে অনুব্রতের হয়ে মামলা লড়েছেন নামকরা আইনজীবীরা। সুকন্যার হয়েও বর্তমানে মামলা লড়ছেন হেভিওয়েট আইনজীবী।যাদের মধ্যে কারও কারও এক দিনের পারিশ্রমিকই কয়েক লাখ টাকা। এতদিন নিজের টাকা থেকেই মামলার অর্থ জুগিয়েছেন অনুব্রত। তবে বর্তমানে ইডি মণ্ডল পরিবারের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করায় একেবারেই নিঃস্ব কেষ্ট।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে নিজের গড়েই জনপ্রিয়তা কমেছে অনুব্রতর। বীরভূম জেলায় তৃণমূলের মিটিং-মিছিল বা প্রায় কোনও কর্মসূচিতেই আজকাল আর তার ছবি দেখা যায় না। দলের নেতার মুখেও নেতার নাম প্রায় শোনা যায় না বললেই চলে। তবে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে উঠে এসেছিল অনুব্রত ও সুকন্যা প্রসঙ্গ। তবে তার খারাপ সময়ে কি দল সব রকম ভাবে তার পাশে থাকবে! এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এই বিষয়ে বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে, দল অনুব্রতকে ছেঁটে ফেলতে চাইছে। কিন্তু, কেষ্ট মুখ খুললে অনেক কিছু বেরোবে, তাই তার পদটুকু রেখে দিয়েছে।” খোঁচা দিতে ছাড়েনি বামেরাও। সিপিএমও জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “টাকার ভাগ শেষ পর্যন্ত পৌঁছয়। কিন্তু যখন কেউ বিপদে পড়ে, তখন তার পাশে কেউ থাকে না।”
তবে বিরোধীদের কথায় একেবারেই কান দিতে নারাজ বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিরোধীদের সব সময় হাউহাউ করে চিৎকার করলে আর যুক্তিহীন ভাবে কথা বললেই চলবে না। তাদেরও বুঝতে হবে বিষয়টি বিচারাধীন।” অনুব্রতের মামলার টাকা কে যোগাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা দেখি না। তাই এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।”