রেল ট্র্যাকের পাশে থাকা এই বক্সগুলিই বাঁচায় লক্ষ লক্ষ যাত্রীর প্রাণ! এগুলির কাজ জানলে চমকে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ট্রেনে (Train) সফরকালে জানালার বাইরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু, ট্রেনে চড়াকালীন রেল ট্র্যাকের ঠিক পাশেই কিছু দূর অন্তর অন্তর অ্যালুমিনিয়ামের এই বক্সটিকে দেখেননি এমন যাত্রী খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ট্রেনের যাঁরা নিত্যযাত্রী তাঁরা সকলেই এই বক্সটিকে দেখতে অভ্যস্ত হলেও এর কাজটি ঠিক কি সেই সম্পর্কে বিশদে অনেকেই জানেন না। চলুন, এই প্রতিবেদনে জেনে নিই রেল লাইনের পাশে থাকা বক্সটির কাজ সম্বন্ধে!

রেললাইনের প্রতি ৩ থেকে ৫ কিলোমিটারের নির্দিষ্ট একটি দূরত্বে দেখতে পাওয়া যায় অ্যালুমিনিয়ামের এই বক্সটিকে। এটি আসলে যাত্রী সুরক্ষার কাজেই ব্যবহৃত হয়। রেলের ভাষায় এটিকে “অ্যাক্সেল কাউন্টার বক্স” বলা হয়। এই বক্সের ভেতরে থাকে একটি স্টোরেজ ডিভাইস। যেটি সংযুক্ত থাকে রেল ট্র্যাকের সাথে।

Why are these boxes next to the rail tracks

আপাতদৃষ্টিতে দেখতে গেলে এই বক্সটির কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বক্সটির নাম দেখেই অনুমান করা সম্ভব যে, এটি ট্রেনের অ্যাক্সেল গণনা করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অ্যাক্সেলের মাধ্যমেই ট্রেনের চাকাগুলি সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ এই বক্স সরাসরি ট্রেনের চাকা গুনতেও সক্ষম। যার ফলে, সফর শুরুর সময় ট্রেনটি যে সংখ্যক চাকা নিয়ে বেরিয়েছে ঠিক সেই সংখ্যক চাকা নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর রয়েছে কিনা সেটিও গণনা করে বক্সটি। ফলে, এড়ানো সম্ভব হয় বড়ো দুর্ঘটনাও।

আরও পড়ুন: এবার Google Maps-কে টক্কর দিচ্ছে এই ৩ টি ভারতীয় নেভিগেশন অ্যাপ! এগুলির ফিচার্স জানলে অবাক হবেন

আবার কখনও দুর্ঘটনার কারণে যখন ট্রেনের একটি বা দু’টি বগি আলাদা হয়ে যায় তখন এই “অ্যাক্সেল কাউন্টার বক্স” সহজেই গণনা করে জানিয়ে দেয় যে, স্টেশন থেকে বেরোনোর সময় ট্রেনে সমস্ত বগি থাকলেও দুর্ঘটনার ফলে সেই সংখ্যায় হেরফের ঘটেছে। যার ফলে দ্রুত দুর্ঘটনার খবর পৌঁছে যায় রেলের কাছে। সেই কারণেই বক্সগুলিকে ৩ বা ৫ কিলোমিটার দূরত্বে বসানো হয় যাতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বগিগুলিকে যেখান থেকে আলাদা করা হয়েছে সেই জায়গাটিকেও সনাক্ত করা যায়।

আরও পড়ুন: অপেক্ষার অবসান! ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ কানেক্টিভিটি করিডোরের হল শুভারম্ভ, সামিল রয়েছে ৮ টি দেশ

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, ট্রেন চলাচলে এই বক্স প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে। যখন কোনো ট্রেন অ্যাক্সেল কাউন্টার বক্সের সামনে দিয়ে যায় ঠিক তখনই ওই ট্রেনের এক্সেল সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য বক্সে রেকর্ড হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে তা পৌঁছে যায় তার পরবর্তী বক্সে। যখন, পূর্ববর্তী বক্সের সাথে পরবর্তী বক্সের সংখ্যা মেলেনা তখন সামনের “অ্যাক্সেল কাউন্টার বক্স” স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের সিগন্যাল “লাল” করে দেয়। যার ফলে চালক ট্রেন থামিয়ে সতর্ক হয়ে যান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বাক্স ট্রেনের অ্যাক্সেল গণনার পাশাপাশি, ট্রেনের গতি এবং অভিমুখও নির্দেশ করে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর