বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বাংলা দখলের স্বপ্ন পূরণ হয়েছিলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এবার তিনি সেই নন্দীগ্রাম থেকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে চলেছেন। এর আগে তিনি ২০১১ আর ২০১৬ পরপর দুবার ভবানীপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরপর দুবার জিতেওছিলেন সেখান থেকে। তবে ২০১১-র তুলনায় ২০১৬ সালে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট মার্জিন অনেক কমেছিল।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন সুব্রত বক্সী। সেবার তিনি ৮৭ হাজার ৯০৩ টি ভোট পেয়েছিলেন। এরপর রাজ্যে সিপিএমকে সরিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই ভবানীপুর আসনটি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ছেড়ে দেন সুব্রত বক্সী। ২০১১ সালের উপ নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ৭৬ হাজার ৬৩৫ টি ভোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপর পাঁচ বছর পর সেই আসনেই আবারও দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৬ সালে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর জিতলেও অনেক কম ভোট পান। সেবার তিনি পেয়েছিলেন ৬৫ হাজার ৫২০ টি ভোট। ওনার প্রতিদ্বন্দ্বী দীপা দাশমুন্সি পেয়েছিলেন ৪০ হাজার ২১৯ টি ভোট। ২০১১ এর তুলনায় ২০১৬ সালে ভবানীপুর কেন্দ্রে ২৯.৭৯ শতাংশ ভোট কম পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন অনুযায়ী ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল মাত্র ৩ হাজার ১৬৮ টি ভোটে এগিয়ে আছে। যা কালীঘাটের কাছে খুবই চিন্তার বিষয়। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন অনুযায়ী ভবানীপুরের ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে পিছিয়ে আছে তৃণমূল। আর ভবানীপুরের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডেই থাকেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে নিজের ওয়ার্ডেই পিছিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আজ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় জানা গিয়েছে যে, এবার ভবানীপুর আসন থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হচ্ছেন নন্দীগ্রাম থেকে। আজ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ট্যুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেছেন। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, ‘হারের ভয়ে একলাফে ভবানীপুর থেকে নন্দীগ্রামে চলে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি দৌড়াতে পারবেন, লুকিয়ে থাকতে পারবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য নন্দীগ্রাম কেন, রাজ্যের কোনও আসনই নিরাপদ নয়। তিনি ১০ বছর মা-মাটি-মানুষের নামে রাজ্য জুড়ে অত্যাচার আর লুঠতরাজ চালিয়েছেন।”
1.2 After looting and tormenting 'Maa, Mati, Manus' for all these 10 years, there is no safe-seat for Mamata in Paschim Banga.
— Dilip Ghosh (@DilipGhoshBJP) March 5, 2021
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বাঙালি ভোটারদের পাশাপাশি অবাঙালি ভোটারদের সংখ্যাও অনেক বেশি। আর ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ওই অবাঙালি ভোটের সিংহভাগই বিজেপিতে গিয়েছিল। আর সেই পরিসংখ্যানকে মাথায় নিয়ে ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূলকে হারানোর ছক কষছে বিজেপি। পাশাপাশি তৃণমূলের অন্দরেও আসনটি নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর সেই কারণেই এবার তৃণমূল নেত্রী সেই আসন ছেড়ে চলে গিয়েছেন অন্য আসনে।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা