কেন Bisleri-র মালিক হতে চাইলেন না জয়ন্তী চৌহান? সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরলেন মনের কথা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: রেলস্টেশনে থাকা কোনো খাবারের স্টল হোক বা বাড়ির কাছাকাছি কোনো দোকান, এমনকি, বড় বড় রেস্তোরাঁতেও গিয়ে সকলেই যে ব্র্যান্ডের জলের বোতলের খোঁজ করেন সেটি হল Biselri। এমতাবস্থায়, এবার বিক্রি হতে চলেছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মিনারেল ওয়াটার কোম্পানি। এই সংস্থাটি ১৯৬৯ সালে রমেশ চৌহানের (Ramesh Chauhan) আয়ত্তে আসে। তারপরে ব্যবসাটি রকেটের গতিতে বাড়তে থাকে। উল্লেখ্য যে, ভারতে বোতলজাত পানীয়ের ব্যবসা হল ২০ হাজার কোটি টাকার। যার মধ্যে ৬০ শতাংশ শেয়ার অসংগঠিত। এদিকে, সংগঠিত বাজারে Bisleri-র ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মত কোনো উত্তরসূরি নেই: এদিকে, এই বিপুল সাফল্য হাসিল করার পরেও রমেশ চৌহান তাঁর কোম্পানিটি বিক্রি করতে চান। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, তাঁর মেয়ে জয়ন্তী চৌহান এই ব্যবসায় খুব একটা আগ্রহী নন। এমতাবস্থায়, ৮২ বছর বয়সী রমেশ চৌহান স্বাস্থ্যজনিত কারণে এবং উত্তরসূরির অভাবের জন্য ৭ হাজার কোটি টাকায় তাঁর কোম্পানিটি বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এই কোম্পানি কেনার বিষয়ে Bisleri এবং টাটা কনজিউমারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এদিকে, এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই রমেশ চৌহানের একমাত্র কন্যা জয়ন্তী চৌহান সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সকলেই।

জয়ন্তী চৌহান কি নিজের পরিচয় তৈরি করতেই বিসলেরির মালকিন হতে চান না: এই প্রসঙ্গে জয়ন্তীর পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে, অনুমান করা হচ্ছে যে জয়ন্তী তাঁর ফ্যাশন সংক্রান্ত ব্যবসায় মনোযোগ দিতে চান। এদিকে, Bisleri বিক্রি হওয়ার খবরের আবহে জয়ন্তী তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইলে লিখেছেন যে, “প্রতিটি গল্পের দু’টি দিক রয়েছে”। মাত্র এক লাইন লিখেই জয়ন্তী একটা বড় বিষয় তুলে ধরেছেন। এদিকে, জয়ন্তীর এই পোস্টে সকলের মধ্যেই তুমুল প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে। এমনকি, তাঁর এহেন মানসিকতার জন্য জয়ন্তীর প্রশংসাও করছেন সকলে।

এদিকে, এই পোস্ট থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে, জয়ন্তী তাঁর বাবার ব্যবসাকে এগিয়ে না নিয়ে নিজের পরিচয় তৈরি করতে চান। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, জয়ন্তী প্রায় ১৪ বছর ধরে এই ব্যবসা চালিয়ে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি “Bisleri”-কে একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছেন। পাশাপাশি, জয়ন্তীর পোস্ট থেকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে শীঘ্রই তিনি তাঁর নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

Bisleri-কে দিয়েছেন নতুন পরিচয়: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, জয়ন্তীর বয়স যখন ২৪ বছর ছিল তখন তিনি তাঁর বাবার কোম্পানি অর্থাৎ Bisleri-র দায়িত্ব নেন। এমনকি, জয়ন্তীর নেতৃত্বে দিল্লি অফিসে প্ল্যান্টও চালু হয়। সামগ্রিকভাবে “Bisleri-র ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয় করে তুলতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও, জয়ন্তী Bisleri মিনারেল ওয়াটার, বেদিকা ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার, ফিজি ফ্রুট ড্রিংক এবং Bisleri হ্যান্ড পিউরিফায়ারের পণ্য পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। পাশাপাশি জয়ন্তী মার্কেটিং, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিংও পরিচালনা করেন।

e23a687638

জয়ন্তী কি ফ্যাশন সংক্রান্ত ব্যবসা শুরু করবেন: উল্লেখ্য যে, জয়ন্তী হলেন একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। ৩৭ বছর বয়সী জয়ন্তী দিল্লি, মুম্বাই এবং নিউইয়র্কে তাঁর শৈশব কাটিয়েছেন। তিনি দিল্লি ও মুম্বাইয়ে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি লন্ডনের কলেজ অফ ফ্যাশন থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়েও স্নাতক হয়েছেন। এছাড়াও তিনি ইস্তিতুতো মারাঙ্গোনি মিলানো (Istituto Marangoni Milano) থেকে ফ্যাশন স্টাইলিং-এর একটি কোর্স করেছেন। শুধু তাই নয়, জয়ন্তী লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ থেকে আরবি ভাষায় ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এমতাবস্থায়, Bisleri-তে কাজ করার সময় তাঁর সেলস, মার্কেটিং, রিটেইলিং-এ দারুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়াও, জয়ন্তী ফ্যাশনের প্রতি খুব আগ্রহী। এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিজের ফ্যাশন ব্র্যান্ড বা ফ্যাশন সম্পর্কিত ব্যবসা শুরু করতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর