বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক বিষয়ে কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। বিরোধীরা যেভাবে শাসকদলকে আক্রমণ করে চলেছে, তাতে ক্রমাগত ব্যাকফুটে তারা। এর মাঝে দলীয় সকল বিধায়কদের সতর্ক করে তৃণমূল নেতৃত্ব জানায়, “এমন কোন কাজ করা চলবে না, যাতে সরকার এবং দল বিব্রত হয়।” তবে এবার সেই সতর্কবাণী উপেক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তুলে দিলেন দলের প্রবীণ নেতা তথা বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী (Abdul Karim Chowdhury)।
সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক বিষয় নিয়ে চাপে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে উদ্দেশ্য করে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির অপমানজনক মন্তব্যের কারণে প্রতিবাদে নেমেছে বিজেপি। পাশাপাশি বিধানসভায় একের পর এক প্রশ্ন তুলে তৃণমূল সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলার প্রচেষ্টা করে চলেছে বিরোধী বিধায়করা আর এর মাঝে এদিন দলের অস্বস্তি বহুগুনে বাড়িয়ে তুললেন আব্দুল করিম চৌধুরী।
কি বলেছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা? উল্লেখ্য, বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন যাতে দলীয় বিধায়কদের তরফ থেকে কোনরকম ভুল কাজ না করা হয়, তা নিয়ে অতীতেও একাধিকবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকে শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই ধারা বজায় রেখে গতকাল একটি বৈঠক করা হয়। যেখানে আচমকাই আব্দুল করিম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কেন বিধানসভায় আসেন না। তিন চার দিন এক ঘন্টা করে আসলেও ভালো হতো”, যা নিয়ে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
গতকাল দলের পরিষদীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী এবং অন্যান্য সকল বিধায়করা। এক্ষেত্রে তাদের কোন কোন পথ অবলম্বন করা দরকার, কিভাবে বিতর্ক এড়ানো যাবে, সেই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আচমকাই দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে আব্দুল করিম বলে ওঠেন, “আমি ১১ বারের বিধায়ক। জ্যোতি বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সকলকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখেছি। তারা সকলেই বিধানসভায় আসতেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি তিন চার দিন এক ঘন্টা করে আসতেন, ভালো হতো।”
তবে তৎক্ষণাৎ তাঁকে এক প্রকার ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন সুব্রত বক্সি। এই ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। তবে পরবর্তীতে এ প্রসঙ্গে করিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “বৈঠকে যে বক্তব্য রেখেছি, তার পুনরাবৃত্তি করব না। আসলে মুখ্যমন্ত্রী যদি অধিবেশনে থাকেন, তাহলে গ্ল্যামার বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই বলেছিলাম।”