স্বাধীন দেশ হলেও কেন সর্বদা ভারতের মানচিত্রের মধ্যে থাকে শ্রীলঙ্কা? কারণ জানলে অবাক হবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাধারণত একটি দেশের মানচিত্রে শুধুমাত্র সেই দেশটিকেই দেখানো হয়। কিন্তু, ভারতের (India) মানচিত্রের ক্ষেত্রে ভারতের পাশাপাশি আমরা দেখতে পাই শ্রীলঙ্কাকেও (Sri Lanka)। যদিও, ভারতের আরও অন্যান্য অনেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র যেমন, পাকিস্তান, চিন, বাংলাদেশ বা মায়ানমার থাকলেও সেগুলিকে দেখানো হয়না দেশের মানচিত্রে। তাই, খুব সহজেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কাই কেন স্থান পায় ভারতের ম্যাপে?

এই প্রসঙ্গে অনেকে মনে করতেই পারেন, শ্রীলঙ্কার ওপর ভারতের নিশ্চয়ই কোনো সামরিক অধিকার আছে বা মানচিত্র নিয়ে দুই দেশের মধ্যে নির্ঘাত কোনো চুক্তি রয়েছে! কিন্তু, বিষয়টি ঠিক সেইরকম নয়। শ্রীলঙ্কার ভারতের ম্যাপে অন্তর্ভুক্তির পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ কারণ।

এই ঘটনার পেছনে রয়েছে একটি আইন। যেটির নাম হল “Ocean Law”। ১৯৫৬ সালে এই আইন প্রণয়নের জন্য জাতিসংঘ “Conference on the Law of the Sea” (UNCLOS ) নামে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত করে এবং ১৯৫৮ সালে জাতিসংঘ এই সম্মেলনের ফলাফল ঘোষণা করে। এই সম্মেলনে সমুদ্র সংক্রান্ত সীমানা নিয়ে একটি মতামত ঐক্যবদ্ধভাবে গ্রহণ করা হয়। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত মোট তিনটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এটি সমুদ্র সম্পর্কিত আইনকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ওই আইনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, ভারতের মানচিত্রে যেকোনো দেশের বেস লাইন থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে থাকা জায়গাটি দেখানো বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ, কোনো দেশ যদি সমুদ্রের তীরে অবস্থিত হয় এবং তার সীমান্ত যদি ২০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে থাকে তাহলে সেই দেশটি ভারতের মানচিত্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এক্ষেত্রেও ঠিক সেই ঘটনাটিই ঘটেছে।

IMG 20220107 115247

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০০ নটিক্যাল মাইল মানে ৩৭০ কিলোমিটার। তাই ভারতের মানচিত্রে সীমান্ত থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত এলাকা দেখানো হয়েছে। এই কারণেই ভারতের ম্যাপে শ্রীলঙ্কার মানচিত্রও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ভারতের ধানুশকোডি থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব মাত্র ১৮ নটিক্যাল মাইল। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভারতের মানচিত্রে শ্রীলঙ্কা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। যেখানে পাকিস্তান, চিন, বাংলাদেশ বা মায়ানমার এই আইনের মধ্যে পড়েনা।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর