বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) ক্রমবর্ধমান হিংসা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহে ফের জোরালো হচ্ছে শেখ হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা। ঢাকায় রাজনৈতিক মহলে নতুন করে চিত্রনাট্য লেখা শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ২০২৪ সালের আগস্টে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে সেই নিষেধাজ্ঞার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির নির্বাচনী রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে।
বাংলাদেশে (Bangladesh) শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তন?
নির্বাচন ঘোষণার পরপরই ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদীর হত্যাকাণ্ড পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। শেখ হাসিনার কট্টর রাজনৈতিক বিরোধী হিসেবে পরিচিত হাদীর মৃত্যুর পরই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা ও অরাজকতা। একাধিক জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যার ফলে অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:বড়দিনের আগেই বিরাট নজির ISRO-র! ‘বাহুবলী’-র মাধ্যমে সফল উৎক্ষেপণ ৬,০০০ কেজির নীল পাখির
হাদীর মৃত্যুর পর উগ্রপন্থী ও বিরোধী নেতাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আমির, জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির প্রধান এবং বিএনপির নির্বাহী সভাপতিও হত্যার আশঙ্কা প্রকাশ করে নিজেদের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের বন্দুক লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই আবহেই আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বিরোধী দলগুলির অবস্থানেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। হাদীর মৃত্যুর পর এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম জানান, শেখ হাসিনা নির্বাচনে অংশ না নিলে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের আপত্তি নেই। একই সুর শোনা গেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপির মধ্যেও। অন্য দিকে বিচার বিভাগ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জুবায়ের রহমানের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সাম্প্রতিক শুনানিতে সরকারের আইনজীবীকে আদালতের কড়া তিরস্কার, ইউনূস সরকারের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।

আরও পড়ুন:৮৪ বলে ১৯০ রান! বছরের শেষে দুর্ধর্ষ বিশ্বরেকর্ড গড়লেন অপ্রতিরোধ্য বৈভব সূর্যবংশী
আন্তর্জাতিক মহলেও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে নজরদারি তীব্র হয়েছে। আমেরিকা, চিন ও রাশিয়া শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে। ভারতও একই বার্তা দিয়েছে। শেখ হাসিনা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাঁর দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দিলে তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা চুপ থাকবেন না। বর্তমানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে পূর্বে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ১৪টি দল একটি জোট গঠন করে ৩০০ আসনেই সক্রিয় হয়েছে। সরকার গঠনের জন্য যেখানে প্রয়োজন ১৫১টি আসন, সেখানে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী জনসমর্থনই আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।












