বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল ঢাকা থেকে। রবিবার সেই চিঠির তথ্য প্রকাশ্যে আসে। তারপরই প্রথম প্রতিক্রিয়া দিল ভারত। বুধবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের করা অনুরোধ ভারত খতিয়ে দেখছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা এবং অন্তর্ভুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর কথায়, এই মুহূর্তে গোটা অনুরোধটিকে বিচারবিভাগীয় এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে।
শেখ হাসিনাকে কি (Sheikh Hasina) বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে ভারত?
বাংলাদেশের পাঠানো চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছিল, ভারতীয় হাইকমিশনার যেন দ্রুত দিল্লির বিদেশ মন্ত্রকের কাছে বিষয়টি পৌঁছে দেন। জানা গিয়েছে, চিঠিটি আসে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরপরই। বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা-সহ একাধিক অভিযোগে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। পাশাপাশি, মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া এক পুলিশকর্তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও শুনিয়েছে আদালত। আদালতের রায় ঘোষণার পরই বাংলাদেশ সরকার হাসিনার প্রত্যর্পণ দাবি তোলে।
আরও পড়ুন: ফাটা গোড়ালি থেকে মুক্তির সঠিক উপায়! শীতের শুষ্কতা রোধে এই ৫ ঘরোয়া কৌশল
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রকে এদিন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ থেকে আসা চিঠি সম্পর্কে। জয়সওয়াল জানান, তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং সেই অনুরোধ আনুষ্ঠানিকভাবে এসেছে। তিনি স্পষ্ট করেন, এই চিঠির প্রতিটি দিক আইনি কাঠামোর মধ্যে রেখে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তবে ভারত এখনও পর্যন্ত হাসিনাকে (Sheikh Hasina) ফেরত পাঠানো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই মন্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট—নয়াদিল্লি বিষয়টিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবেই দেখছে।
এটা প্রথম নয়, এর আগেও অর্থাৎ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে একই ধরনের বার্তা দিয়েছিল ঢাকা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাসিনার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরপরই ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠানো হয়। সেই সময়ও বাংলাদেশের তরফে হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে তিনি ফেরার বলে দাবি ঢাকার। আদালতের রায় ঘোষণার পর দেশ ছেড়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেন হাসিনা (Sheikh Hasina)। তারপর থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই তিনি দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন বলে দাবি।

আরও পড়ুন:রেজিস্ট্রেশনে ঢিলেমি, টোটো মালিকদের আবেদনে ১ মাস বাড়ল নাম নথিভুক্তির সময়সীমা
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চিঠি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতা আরও বাড়িয়েছে। একদিকে বাংলাদেশের আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে ভারতে থাকা হাসিনাকে (Sheikh Hasina) ফেরত চাইছে ঢাকা। তবে নয়াদিল্লি কোন সিদ্ধান্ত নেয়, তা এখন কেবল সময়ই বলবে। ভারত আইনি ও কূটনৈতিক পর্যালোচনা শেষ না করা পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত অবস্থান স্পষ্ট করবে না বলেই ইঙ্গিত মিলেছে বিদেশ মন্ত্রকের মন্তব্যে।












