বাংলাহান্ট ডেস্ক : শিক্ষার কোনও বয়স হয় না। মানুষ যতদিন বাঁচে ততদিনই শিক্ষা লাভ করতে পারে। বাংলাদেশের অভিভাবকরা সেই কথাই প্রমাণিত করলেন। বাংলাদেশের এসএসসি পরীক্ষায় বহু বাবা-মা উত্তীর্ণ হলেন তার সন্তানদের সাথে। এক মা এইবার ছেলের সঙ্গে বসে ছিলেন এসএসসি পরীক্ষায়। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন তিনি। আবার অনেক জায়গায় খবর এসএসসি পরীক্ষায় ছেলেমেয়েদের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাদের বাবারাও।
জানা গিয়েছে, পাবনার ভাঙ্গুড়ার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুয়ারা খাতুন এইবার ছেলের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় বসে ছিলেন। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে জয়লাভ করলেন তিনি। মঞ্জুয়ারা দেবীর স্বামী আব্দুর রহিম ভ্যান চালান। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসার। মঞ্জুয়ারার লেখাপড়া বিয়ের পর বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তার ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে ডিগ্রি লাভ করা।
সেই ইচ্ছা থেকেই সংসার সামলানোর পর ছেলের সাথে করতেন পড়াশোনা। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ‘শামীমা জাফর মৎস্য ইনস্টিটিউট’ থেকে ৪.৮৯ জিপিএ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছেন মঞ্জুয়ারা। মঞ্জুয়ারা জানিয়েছেন, “স্বামী ভ্যান চালায়। তিনি কষ্ট করে আমার ও আমার সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। উনি না এগিয়ে এলে আমার স্বপ্ন পূর্ণ হতো না।” আব্দুর রহিমের ইচ্ছা তার স্ত্রী যেন সন্তানদের সাথে পড়াশোনা করে আরও এগিয়ে যান।
অন্যদিকে, খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় এই বছর বাবা ও মেয়ে একসাথে এসএসসি পাস করেছেন। গৌরীপুর উপজেলার বাইরাউড়া গ্রামের এখলাসউদ্দিন এসএসসি পাশ করেছেন তার ছেলের সাথে। নাটোরে বাগাতিপাড়ার চকতকিনগর গ্রামের ইমামুল ইসলামও ছেলের সাথে পরীক্ষায় বসে একই বছরে উত্তীর্ণ হয়েছেন এসএসসি। এরকম বহু পরীক্ষার্থী রয়েছেন যারা বয়সের তোয়াক্কা না করে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। এ সমস্ত ব্যক্তিরা আরো একবার প্রমাণ করলেন বয়স শুধুমাত্র সংখ্যা মাত্র।