বাংলাহান্ট ডেস্কঃ গরীব শিশুদের জন্য টায়ার (Tire) দিয়ে একটি দুর্দান্ত প্লে স্কুল (Play school) বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন গুজরাটের আহমেদাবাদে বসবাসকারী অনুজা ত্রিবেদী। দীর্ঘদিন ধরে ফার্মা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার মধ্যেই তিনি এবং তার স্বামী সময় পেলেই কিছু অনাথ শিশুদের সাথে সময় কাটাতেন। তাঁদের জন্য উপহার নিয়ে যেতেন, যাতে ওই শিশুগুলো খুশি হয়। তাই সেই বাচাগুলোর কথা ভেবেই অনুজা ত্রিবেদী এবং তার স্বামী মিলে বানিয়ে ফেললেন একটি প্লে স্কুল, যা ওই শিশুগুলো কখনই ভাবতে পারেরনি।
অনুজা ত্রিবেদী জানান, ‘আমি আর আমার স্বামী সবসময় সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কিছু করতে চাই। এতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। একবার আমার সন্তানের জন্মদিনে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থায় গিয়ে কাটিয়েছিলাম, যেখানে অনেক অনাথ শিশু থাকত। সেখানে ওই শিশুদের জন্য খেলার মাঠ তো ছিল, কিন্তু কোন খেলার সামগ্রী ছিল না। তখন আমি ঠিক করি তাদের জন্য একটি দোলনা প্রস্তুত করব। আর আমি পুরোন টায়ারের সহযোগে ওই বাচ্চাদের জন্য একটি দোলনা প্রস্তুত করে দি। এই দোলনা দেখে ওই বাচ্চারা খুব আনন্দিত হয়’।
তিনি আরও জানান, ‘এরপর ওই খেলার মাঠ দেখে প্রহ্লাদনগরের নবগঠিত স্লাম স্কুল থেকে আমাদের বলা হয়, আমরা যেন ওই স্কুলের বাচাদের জন্যও কিছু খেলার সামগ্রী বানিয়ে দি। ওই স্কুলটি দরিদ্র বিভাগের শিশুদের শিক্ষা দেয়’। তারপর তারা সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বার্তা বলে ওই স্কুলের বাচ্চাদের জন্য একটি বা দুটি খেলার সামগ্রী নয়, গোটা একটা প্লে স্টেশন বানিয়ে দেয়। এই কাজে তাঁদেরকে অনেকেই অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছিল।
এই প্রকল্পের পরে, তারা তাদের চাকরি ছেড়ে শুধ্মাত্র এই কাজটি করার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের ছোট্ট স্টার্টআপ ‘গ্রিন বাডস’ এখান থেকে শুরু হয়েছিল, যার মাধ্যমে তিনি শিশুদের জন্য সরকারী এবং ট্রাস্ট স্কুলে পুরানো টায়ার, প্লাস্টিক ইত্যাদি ব্যবহার করে আকর্ষণীয় প্লে স্টেশন তৈরি করছেন। এখন পর্যন্ত তারা ২০ টি স্কুলে এই অভিনব প্রকল্প করেছে, যা আহমেদাবাদ, কানপুর এবং বেঙ্গালুরুতে রয়েছে। এই কাজে তিনি তার পরিবারের পুরোপুরি সমর্থন পেয়েছেন।
এই কর্মকান্ডের জন্য তিনি বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে পুরনো টায়ার কিনে আনতেন। আবার অনেক দোকানদাররা তার এই মহৎ কর্মকাণ্ডের কথা শুনে তাঁকে বিনামূল্যেই টায়ার দিয়ে দিতেন। তারা বাচ্চাদের শুধুমাত্র খেলা ধূলাই নয়, দেওয়ালে বিভিন্ন পড়াশুনার জিনিস এঁকে তাঁদের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পুরনো টায়ার ব্যবহার করে এই অভিনব প্রচেষ্টার জন্য তিনি এই বছর ‘গ্লোবাল রিসাইক্লিং অ্যাওয়ার্ড’ও পেয়েছিলেন। আসতে আসতে তিনি এবার তার এই প্রকপ্লের বিষয়ে দিল্লীর বিদ্যালয়গুলোর সাথেও কথা বলবেন।