বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: যেদিন থেকে প্রকাশ্যে এসেছে যে ১৮ই অক্টোবরের পর থেকে সৌরভ গাঙ্গুলী আর বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থাকছেন না, সেদিন থেকেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন নানান ব্যক্তিত্বরা। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে সৌরভের সময় ভারতীয় ক্রিকেটের সামগ্রিক পারফরম্যান্সের প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি, যার জন্য তাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ব্যাপারটিকে কেন্দ্র করে এখন রাজনৈতিক কাজিয়া অব্যাহত, তারমধ্যে আজ নতুন করে নাম লেখালেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র।
সৌরভকে বিসিসিআই সভাপতির পদ থেকে সরানো বাঙালির অপমান, এমনটাই মন্তব্য করেছেন মদন মিত্র। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই ব্যাপারে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “সৌরভ গাঙ্গুলী সম্ভবত আইসিসির সভাপতি হচ্ছেন। কিন্তু বিজেপি যদি উনার কনসেন্ট ছাড়া একটা ষড়যন্ত্র করে তাকে সরিয়ে দিয়ে থাকে তাহলে সেটা শুধুমাত্র সৌরভের নয় গোটা বাঙালী জাতি, এমনকি ভারতীয় ক্রিকেটেরও অপমান।”
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেছেন, “কোথাও সৌরভ গাঙ্গুলীর মুখটা হয়তো তৃণমূলের সাথে যুক্ত আছে তৃণমূলের পতাকার তলাতেই উনি আছেন। এমনটা হলে আমাদের জন্য সেটা খুবই আনন্দের ব্যাপার হবে কিন্তু তার কন্সেন্ট ছাড়া তাকে এই ভাবে সরিয়ে দেওয়া টাকা বাঙালি জাতির প্রতি অপমানজনক।” সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিজে বড় বড় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজের যোগসূত্রের ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। সিপিএম তৃণমূল বিজেপি প্রত্যেক দলের কিছু নেতার সঙ্গে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। সেই জায়গা থেকে মদন মিত্র এমন মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
এর আগে গতকাল এই জল্পনা এবার উসকে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। মমতা ব্যানার্জির রাজ্যের মানুষ বলেই এমন আচরণ করা হচ্ছে সৌরভের সাথে, এমনটা বলতে দুবার ভাবেননি তিনি। তিনি টুইট করে লিখেছেন, “বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার আরও এক উদাহরণ হল সৌরভে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। অমিত শাহর ছেলে বোর্ডের সচিব পদে থেকে যাচ্ছে কিন্তু সৌরভকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে! মমতা ব্যানার্জির রাজ্যের মানুষ আর বিজেপি যোগ দেননি সেই কারণেই কি এমনটা করা হলো?” তার এই বক্তব্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৃণমূলের কুনাল ঘোষ মন্তব্য করেছেন, “কি করে বিজেপির আরেক মন্ত্রীপুত্র বিসিসিআইয়ের নিজের পথ ধরে রাখছেন আর সৌরভের মতো ক্রিকেটার সরে যাচ্ছে! এসব ঘটছে প্রশ্ন ওঠা তো স্বাভাবিক।
সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “যদি সৌরভ রাজনীতির শিকার হয়ে বিসিসিআই সভাপতির পদ থেকে বিতাড়িত হন, তাহলে আমি সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কিন্তু আমি মনেপ্রাণে চাই সৌরভ আইসিসিতে যাক। খেলা ও রাজনীতি এক জায়গায় নিয়ে আচ্ছা আমার একেবারেই পছন্দ নয়।” তৃণমূল সাংসদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, “সব জায়গায় তারা রাজনীতি দেখেন তাদের আর নতুন করে কিছু বলার নেই। একদিন উনাকেও মুখপাত্রের পথ থেকে সরে যেতে হবে, তখন আশা করি তিনি রাজনীতিকে দোষ দেবেন না।” জয় শাহ কি করে নিজের পদ ধরে রাখছেন সেই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেছেন কোথাও লেখা নেই যে একসঙ্গে দুজনকে সরে যেতে হবে।