সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যান আর সেখানেই উঠে এসেছে পাকিস্তানের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট। ইমরান খানের পদত্যাগের পর সম্প্রতি নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফ দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করলেও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যে ডামাডোলের মধ্যেই রয়েছে, সে বিষয়ে জানান দিচ্ছে এই পরিসংখ্যান।বিশ্ব ব্যাংকের মতে, পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার প্রায় 34 শতাংশ মানুষ বর্তমানে ন্যূনতম আয়ে জীবন যাপন করছে। বিশ্ব ব্যাংক দ্বারা ঘোষিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিদিন এই সকল মানুষের রোজগার মোটে 588 টাকার আশেপাশে থাকে।
অপর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, বর্তমানে পাকিস্তানের জিনিস পত্রের দাম হু-হু করে বেড়ে চলেছে এবং দেশের মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলির ওপর এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। ফলে স্বভাবতই পাকিস্তানের বর্তমান অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল যে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে ভবিষ্যতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন তা বলা বাহুল্য। দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়াই আপাতত লক্ষ্য তাঁর।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানে আয়ের দিক থেকে সবচেয়ে নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের প্রতিদিনের প্রায় 50% আয়ই চলে যায় খাবারের পিছনে। যদিও প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতবছর প্রায় 37 শতাংশ মানুষ ন্যূনতম আয়ে জীবন যাপন করতেন। এ বছর সেই সংখ্যা প্রায় তিন শতাংশ কমলেও তা যে কখনোই পর্যাপ্ত নয়, সে বিষয়ে এদিন নিশ্চিত করে বিশ্ব ব্যাংক।
ফলে একথা স্বীকার করতেই হবে যে বর্তমানে নতুন সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর করা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী পদের দায়িত্ব পাওয়া ইসমাইল সহ দেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী শীঘ্রই আমেরিকা পাড়ি দিচ্ছেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইএমএফ সহ বিশ্ব ব্যাংকের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
বিশ্ব ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমান বছরে পাকিস্তানের শহরাঞ্চলে যেখানে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্য 25.1 শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেখানে গ্রামীণ এলাকায় এই হার প্রায় 22.6 শতাংশ। তবে এ সকল ঘটনা সত্বেও বর্তমান অর্থমন্ত্রী বলেন, “অর্থনৈতিক সংকটকে দূরে সরিয়ে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম একটি অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে নিজেদের স্থাপন করতে সক্ষম হব।”