বাংলা হান্ট ডেস্ক: এমন কোনও খাবার নেই যেখানে প্রয়োজন পড়ে না নুনের। বলা যায়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যে খাবারই খাওয়া হোক না কেন প্রত্যেকটিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ নুনের প্রয়োজন। তবে এবার নুন খাওয়া নিয়ে নির্দেশিকা জারি করল হু (World Health Organization)। কতটা নুন খেলে শরীরের জন্য ভালো, আর কতটা খেলে হার্ট অ্যাটাকে ঝুঁকি বাড়ে, কোন নুন খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উচিত অনেকেই না জেনে খেতে থাকেন। এবার এই সমস্ত কিছুর উত্তর পাওয়া গেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হাত ধরে। এখন থেকে নুন খাওয়ার আগে জেনে নিন এই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য।
নুন খাওয়া নিয়ে নির্দেশিকা জারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization):
হু-র (World Health Organization) নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে কারোরই দিনপ্রতি শরীরে ২ গ্রামেরও কম সোডিয়ামের প্রয়োজন। কিন্তু এদিকে সাধারণ ৫ গ্রাম নুনেই থাকে ২ গ্রাম সোডিয়াম। তাই সে দিক থেকে দেখতে গেলে আপনাকে প্রতিদিন ৫ গ্রামেরও কম নুন খেতে হবে। আর নুন খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিলে, শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণও কমতে থাকবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) নির্দেশিকায় আরও জানিয়েছে, সোডিয়াম যুক্ত নুন খাওয়ার বদলে, পটাশিয়াম রয়েছে এমন নুন খাওয়া উচিত। বিশেষ করে যে সমস্ত ব্যক্তিদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্যই এই পরামর্শ। শিশু হোক কিংবা মহিলা কিংবা বয়স্ক কোনও ব্যক্তি কিডনির সমস্যা থাকলে এখন থেকে সোডিয়াম যুক্ত নুন খাওয়া বন্ধ করুন। এতে করে আপনারই লাভ হবে।
আরও পড়ুন: ‘আপনার স্বামী যখন বলেছিলেন ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে দেব!’ কোনটায় বেশি লজ্জা… তাপস-পত্নীকে পাল্টা কুণাল
এই নির্দেশিকা অনুযায়ী ঠিক কি কি পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা: WHO-র মতে, তাঁদের গবেষকরা সারা পৃথিবীতে নুন নিয়ে হওয়া ২৬ টি গবেষণা এবং সমীক্ষা খতিয়ে দেখেছেন। আর এই গবেষণায় ৩৫ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন বলেই জানা যাচ্ছে। মূলত তাঁদের ২ মাস থেকে ৫ বছর অবধি শরীরের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, সাধারণ নুন খাওয়ার অভ্যাস বদলানোর ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমেছে। পাশাপাশি, রক্তচাপের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এমনকি পটাশিয়ামযুক্ত নুন খাবার ফলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিশেষ সূত্র মারফত খবর…’, অসুস্থ পার্থকে নিয়ে বিরাট দাবি! তোলপাড় রাজ্য
তবে প্রতিদিন পটাশিয়ামযুক্ত নুন খেলে শরীরে পরিবর্তন ঘটবে এমনটা কিন্তু বলছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারণ আবার বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে সোডিয়ামের বদলে পটাশিয়াম দেওয়া নুন খাওয়ার পরও শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমেনি। তাই পটাশিয়ামযুক্ত নুন খেলেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কিংবা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এই বিষয়ে একেবারেই জোর দিচ্ছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে সকলকে সুস্থ রাখার জন্য এটি পরামর্শ মাত্র।
ভারতীয়দের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ এই নির্দেশিকা: ভারতীয়দের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) এই নির্দেশিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এই মুহূর্তে দেশে কমবয়সিদের মধ্যেও হৃদরোগ, হাইপারটেনশন, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়েছে। সমীক্ষা বলছে যে, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৩৫.৫ শতাংশ হাইপারটেনশনের সমস্যায় ভোগেন। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভারতে মোট মৃত্যুর ২৮.১ শতাংশ হয় শুধুমাত্র হৃদরোগের কারণে। আজকাল অনেকেই নুনের বিকল্প হিসেবে খুঁজে নিয়েছেন সৈন্ধব লবণ। তবে দেখা যাচ্ছে তাতেও সোডিয়ামের পরিমাণ প্রায় একই। এইজন্য সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে পটাশিয়াম যুক্ত নুন গুরুত্বপূর্ণ।