বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল এবং সিপিএমের সম্পর্ক যে মোটেই মধুর নয় তা সর্বজনবিদিত। ৩৪ বছরের বাম শাসনকে পরাস্ত করেন ২০১১ সালে বাংলার মসনদে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা বিতান বইয়ের জন্য অ্যাকাদেমি পুরষ্কার পাওয়া নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে সেই বইয়ের প্রসঙ্গ টেনেই সিপিএমকে একহাত নিল তৃণমূল। তৃণমূলের দাবি, প্রকাশনা সংস্থাকে সামনে রেখেই মোটা টাকার কাটমানি খেয়ে চলেছে সিপিএম। তৃণমূলের মুখপত্র জাগোবাংলায় সোমবার দাবি করা হল এমনটাই।
সিপিএম নেতাদের লেখা অধিকাংশ বইই ছাপা হয় ন্যাশানাল বুক এজেন্সি থেকে। জ্যোতি বসুর ‘যতদূর মনে পড়ে’ থেকে শুরু করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘স্বর্গের নীচে বিশৃঙ্খলা’ সবই প্রকাশিত হয়েছে এই প্রকাশনা সংস্থা থেকেই। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকাও। সেই প্রকাশনা সংস্থার বিরুদ্ধেও বড়সড় অভিযোগ এনেছে তৃণমূল।
জাগো বাংলার একটি প্রতিবেদনে সোমবার লেখা হয়, ‘কাটমানির কথা বলে যারা বাজার গরম করে সেই।সিপিএম এর কাটমানির খবর যে রাখে? ব কলমে বইয়ের ব্যবসার আড়ালে কাটমানি পৌঁছে যায় সিপিএমের কাছে। ন্যাশানাল বুক এজেন্সির বিরুদ্ধে কেন তদন্ত হবে না? সিপিএম এই অর্থেই হিসাব জনমানসে তুলে ধরবে না? ১৯৭৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর কার্যতই সংস্থাটি দখল করে পুরোপুরি ব্যবসায় মন দেয় সিপিএম। কলেজ স্ট্রীটের এঁদো গলি থেকে তৈরি হয় ঝাঁ চকচকে শোরুম। সল্টলেকে বিশাল বাড়ি, অফিস, রেস্ট রুম।’
একই সঙ্গে একাধিক প্রশ্নও তোলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। একই সঙ্গে আরও বলা হয়, ‘ন্যাশনাল বুক এজেন্সির নাম দিয়ে এই পদ্ধতিতে কার্যত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু এবং অনিল বিশ্বাস। ২৫-২৬ বছর ধরে টানা এই ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা কেনাবেচার কেলেঙ্কারি বাঁচাতে পাড়ায়-পাড়ায় দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ন্যাশনাল বুক এজেন্সির স্টল দেওয়া শুরু হয়। উদ্দেশ্য কাটমানির আইনি বৈধতা তৈরি করা।’
এই অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন সিপিএম নেতা রবিন দেব। তাঁর কথায়, ‘অনেক ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে মুজফফর আহমেদ এই ন্যাশনাস বুক এজেন্সি তৈরি করেছিলেন। মার্কসবাদী প্রগতিশীল সাহিত্য বিক্রির জন্য ন্যাশানাল বুক এজেন্সি তৈরি হয়েছিল। এখন ন্যাশানাল বুক এজেন্সির শাখা অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে গিয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রকাশনী সংস্থা থেকে বইগুলি প্রকাশ করা হয়। অন্য প্রকাশনীর বইও বিক্রি হয়। এটা একটা ট্রাস্টের দ্বারা পরিচালিত হয়। এখনও পর্যন্ত কেউ কখনও আঙুল তোলেনি। হঠাৎ কোথা থেকে কাটমানির প্রসঙ্গ এল? নিজেদের অপরাধ ঢাকার জন্য ন্যাশনাল বুক এজেন্সিকে নিয়ে টানাটানি করছে। ঐতিহ্যবাহী ন্যাশানাল বুক এজেন্সি নিয়ে আজগুবি দাবি করছে।’ সব মিলিয়ে যে অভিযোগ প্রতি অভিযোগে তুমুল শোরগোল ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে তা বলাই বাহুল্য।