বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় ফুটবলের দুনিয়ায় একটি অন্যতম প্রাচীন ক্লাব হল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। যেটির পথচলা শুরু হয় ১৯২০ সালের ১ অগাস্ট থেকে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই ক্লাব সম্পর্কে এমন একটি তথ্য উপস্থাপিত করব যেটি অনেকের কাছেই অজানা। মূলত, ইস্টবেঙ্গলের লোগোতে মশাল পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি, স্টেডিয়ামে এই দল জিতলে সমর্থকদের মশাল জ্বালিয়ে সেলিব্রেশন করতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, কেন এই ক্লাবের লোগোতে মশাল রয়েছে। চলুন, এই প্রতিবেদনে জেনে নিই সেই উত্তর।
ইস্টবেঙ্গলের লোগোতে রয়েছে মশাল: প্রথমেই জানিয়ে রাখি, এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের কিছুটা পেছনে ঘুরে তাকাতে হবে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবটি মূলত দেশভাগের পর ওপার বাংলা তথা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে আগত উদ্বাস্তু মানুষের ক্লাব। এমন পরিস্থিতিতে এই ক্লাবের অধিকাংশ সমর্থকই পূর্ববঙ্গের। যদিও, ১৯২০ সালের ১ অগাস্ট এই ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৩০ সালের পর এর লোগোতে স্থান পায় মশাল। আর এই মশাল অন্তর্ভুক্তির পেছনে রয়েছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি ইতিহাস।
আমরা জানি যে, ১৯১১ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই আইএফএ শিল্ড হাসিল করেছিল মোহনবাগান। তবে, ব্রিটিশদের সাথে ইস্টবেঙ্গলও কিন্তু লড়াইয়ে পিছিয়ে ছিল না। এই ক্লাব প্রতিষ্ঠার দশ বছরের মধ্যেই ভারতীয় ফুটবলের সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয়ে পড়ে। এদিকে, ১৯৩০ সাল নাগাদ মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনে বিদেশি দ্রব্য বর্জন করার হিড়িক উঠেছিল। সেই সময়ে ভারতীয় ক্লাবগুলি কলকাতা লিগ থেকে নাম তুলে নিতে থাকে।
আরও পড়ুন: বড় খবর! ভারতের প্রতি মুগ্ধ হয়ে ১৫ বছরে ৮ লক্ষ কোটি বিনিয়োগ করবে এই চার দেশ, সম্পন্ন হল চুক্তি
যার জেরে ওই লিগের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। এমতাবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইএফএ। এদিকে, প্রথম ডিভিশনের চ্যাম্পিয়ন করে দেওয়া হয় রয়্যাল রেজিমেন্ট নামে ইংরেজদের একটি ক্লাবকে। তবে, দ্বিতীয় ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন হয়েও প্রথম ডিভিশনে উঠে আসতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। সেই পরিস্থিতিতে অন্য ভারতীয় ক্লাবগুলির মতো তারাও যদি মাঝপথে লিগ বয়কট করত সেক্ষেত্রে ফের সমস্যায় পড়ত লিগ।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে এবার সস্তা হল পেট্রোল-ডিজেল, আপনার শহরে কত? রইল রেট
উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় ডিভিশনে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এমতাবস্থায়, নিয়ম অনুযায়ী তাদেরই প্রথম ডিভিশনে খেলার কথা থাকলেও তা না হওয়ায় শুরু হয় ক্ষোভ এবং প্রতিবাদে ফেটে পড়েন লাল-হলুদের হাজার হাজার সমর্থক। শুধু তাই নয়, তাঁরা মশাল হাতে জড়ো হন ময়দানে। এদিকে, এহেন প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে ইংরেজদের রীতিমতো মাথা নোয়াতে হয়। আইএফএ-এর গভর্নিং বডির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, প্রথম ডিভিশনে ইস্টবেঙ্গল খেলবে। আর এই ঘটনার পর থেকেই ইস্টবেঙ্গলের লোগোতে মশাল পরিলক্ষিত হয়। যেটি প্রতিবাদের একটি অংশ হয়ে রয়েছে।