কন্ডোম জলে ভিজিয়ে নেশা করে বুঁদ স্কুল-কলেজের ছাত্ররা, চিন্তায় প্রশাসন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এক উদ্ভট সমস্যার সূত্রপাত হয়েছে দুর্গাপুর শহরে। ফ্লেভার্ড কন্ডোমের (Flavoured Condom) বিক্রি হঠাৎই মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে দুর্গাপুর (Durgapur) শহরের সিটি সেন্টার (City Center), বিধাননগর এলাকায়। আর জানা যাচ্ছে, ক্রেতাদের বেশিরভাগই অল্পবয়সী ছেলে। কেউ কলেজের ছাত্র, কেউ বা কলেজ থেকে পাশ করে চাকরির খোঁজ করছে। প্রায় সকলেই অবিবাহিত। অবিবাহিতদের যে কন্ডোম প্রয়োজন হয়না সেটা নয়, কিন্তু যে পরিমাণ বিক্রী হওয়া শুরু হয়েছে সেই পরিমাণ দরকার হয় না। অন্তত দুর্গাপুরের মতো তো হওয়ার সম্ভবত খুবিই কম।

তা হলে হঠাৎ এত কন্ডোমের প্রয়োজন হচ্ছে কোথায়? তা নিয়ে কৌতুহলী হয়ে ওঠেন অনেকেই। এই কৌতুহল থেকেই এক দোকানদার দোকানের এক নিয়মিত ক্রেতা যুবককে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। যে উত্তর সেই দোকানদার পান, তাতে তাঁর মাথা ঘুরে যায়। ওই যুবক জানায়, সে নিয়মিত কন্ডোম কিনে নিয়ে যায় শুধুমাত্র নেশা করবে বলে!

কন্ডোম থেকে নেশা কিভাবে সম্ভব? দুর্গাপুর (Durgapur) শহরের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এখন এই কন্ডোমের নেশা বেশ জনপ্রিয়। অল্প গরম জলে সারারাত একটা কন্ডোম ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে ওই জল খেলেই হবে চরম। এই কন্ডোমের নেশাই এখন অতি প্রীয় বস্তু দুর্গাপুরের যুব সমাজে কাছে।

কিন্তু সত্যিই কি কন্ডোম দিয়ে নেশা করা সম্ভব? দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কন্ডোমের মধ্যে একরকম অ্যারোমেটিক কমপাউন্ড রয়েছে। তা ভেঙেই তৈরি হয় অ্যালকোহল। তাতেই হয় নেশা। ডেনড্রাইটের মধ্যেও এই অ্যারোমেটিক কমপাউন্ড পাওয়া যায়। তাই অনেককেই ডেনড্রাইট দিয়ে নেশা করতে দেখা যায়।’ দুর্গাপুর আরই কলেজ মডেল স্কুলের রসায়নের শিক্ষক নুরুল হক বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ গরম জলে কন্ডোম ভিজিয়ে রাখার ফলে বৃহৎ জৈব অণু ভেঙে অ্যালকোহলিয়ও যৌগের সৃষ্টি হয়। এই যৌগই নেশায় বুঁদ করিয়ে রাখছে যুব সম্প্রদায়কে।’

নেশার এই নতুন পদ্ধতি প্রকাশ্যে আসে কিছুদিন আগে। দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের এক দোকানদার বলেন, ‘দুটি ছেলে প্রতিদিনই আমার দোকান থেকে কন্ডোম কিনে নিয়ে যেত। কৌতুহলবশত একদিন এর কারণ জিজ্ঞাসা করায় ছেলে দুটি জানায় তারা কন্ডোম দিয়ে নেশা করে। ঈষদুষ্ণ জলে কন্ডোম সাত-আট ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পর ওই জল খেলে নাকি দারুণ নেশা হয়। আমি তো শুনে অবাক হয়ে যাই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ঘটনাটি একদমঝ সত্যি।’

জানা গেছে, বিধাননগর (Bidhannagar) এলাকাতেও বেশ কিছু ওষুধের দোকানে বেড়েছে কন্ডোমের চাহিদা। জানা যাচ্ছে, এই কন্ডোম কিনতে আবার একটি কোড ওয়ার্ডও প্রচলিত রয়েছে দুর্গাপুরের একটি কলেজের ছাত্রদের মধ্যে। সিটি সেন্টারের একটি বিশেষ দোকানেই সেই কোড ওয়ার্ডের চল রয়েছে। দোকান মালিক সুজয় পোদ্দার জানান, ‘ওই কলেজের ছেলেরা আমার দোকানে এসে আইডি বললেই আমি ওদের কন্ডোম দিয়ে দিই। কেন এই কোড ওয়ার্ড ব্যবহার করে তা ঠিক জানি না। প্রথমে আইডি শব্দটা শুনেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম এই ধরনের কোনও জিনিস আমি রাখি না। পরে কলেজের একটি ছেলেই আমাকে আইডি শব্দের মানেটা বুঝিয়ে দেয়। । পরে জানতে পারি কন্ডোম দিয়ে ওরা নেশা করে।’

Sudipto

সম্পর্কিত খবর