বাংলা হান্ট ডেস্ক: গোরক্ষনাথ মন্দিরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর মারাত্মক হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত আহমেদ মুর্তজা আব্বাসির ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। জানা গিয়েছে, ইসলাম প্রচারক জাকির নায়েককে অনুসরণ করতেন আব্বাসি। ইউটিউবের মাধ্যমে জাকিরের বক্তব্য শুনতেন তিনি। ইতিমধ্যেই STF, ATS এবং পুলিশ সেইরকমই কিছু ভিডিওর হদিশ পেয়েছে। এমনকি, তাঁর পেনড্রাইভেও মিলেছে একাধিক ভিডিও।
এছাড়াও, মুর্তজার মোবাইল ফোনে থাকা সব নম্বর যাচাই করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, মোবাইলে থাকা নম্বরগুলির বেশিরভাগই মুম্বাইয়ের। তথ্য অনুযায়ী, আহমেদ মুর্তজা আব্বাসিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের পাঁচটি দল তাঁর প্রতিটি বক্তব্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে। পুলিশের পাশাপাশি, ATS এবং STF-এর দলগুলি হামলার সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি ক্ষেত্রে নজরও রেখেছে। ইতিমধ্যেই ATS টিম গোরক্ষনাথ মন্দিরে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি, একটি ম্যাপও তৈরি করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ATS এবং পুলিশের তদন্তে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, হামলাকারী মানসিকভাবে অসুস্থ নন। বরং, তিনি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বড় অপরাধ করতে চেয়েছিলেন। অবশ্য কার অনুরোধে এবং কী উদ্দেশ্যে মুর্তজা মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানাচ্ছে না তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
আরবি ভাষায় লেখা একটি বই পাওয়া গেছে:
তদন্তের সময়ে আহমেদ মুর্তজা আব্বাসির ঘর থেকে আরবি ভাষায় লেখা একটি বই পাওয়া যায়। বইটি কীভাবে এবং কোথা থেকে কেনা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মুর্তজা ATS-এর রাডারে ছিলেন:
জানা গিয়েছে, মুর্তজা আগে থেকেই ATS-এর রাডারে ছিলেন। গত শনিবার, লখনউয়ের নম্বর প্লেট লাগানো একটি বাইকে দু’জন ব্যক্তি আহমেদ মুর্তজা আব্বাসির সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কথা বলেন তাঁরা। এরপরই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন মুর্তজা।
মুর্তজা নেপালেও গিয়েছিলেন:
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, আহমেদ মুর্তজা আব্বাসি বাড়ি থেকে বেরিয়ে সরাসরি নেপালে চলে যান। নেপাল থেকে ফেরার সময় মহারাজগঞ্জ থেকে দুটি ধারালো অস্ত্র কিনেছিলেন তিনি। যে কারণে মহারাজগঞ্জে গিয়ে তদন্ত করছে তদন্তকারী সংস্থার টিম। ওই সময়ে তিনি কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, সেই বিষয়েও খোঁজ চলছে।
পুলিশ হেফাজতে থাকবেন মুর্তজা; পেয়েছেন এক সপ্তাহের রিমান্ড:
গোরক্ষনাথ মন্দিরের নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলার অভিযোগে অভিযুক্ত আহমেদ মুর্তজা আব্বাসিকে সোমবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দীপক নাথ সরস্বতীর আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত ৪ এপ্রিল রাত আটটা থেকে ১১ এপ্রিল দুপুর দু’টো পর্যন্ত অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
তথ্য অনুসারে, প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটিং অফিসার নাগভূষণ পাঠক বলেছেন যে, অভিযুক্ত কয়েক দিনের জন্য মুম্বাই, জামনগর, কোয়েম্বাটুর, নেপাল এবং লুম্বনিতে গিয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড, আধার কার্ড, দিল্লি থেকে মুম্বাই ফ্লাইটের টিকিট এবং উর্দুর মতো ইসলামিক ভাষার সাহিত্য পাওয়া গেছে।
পাশাপাশি, পুলিশ হেফাজতের রিমান্ড মঞ্জুর করে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে অভিযুক্তকে হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের পাশাপাশি মানবাধিকার কমিশনের দেওয়া নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে বলেও জানা গিয়েছে। এই সময় অভিযুক্তের আইনজীবীও যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখতে পারেন।