একসাথে ১২ টি দুষ্প্রাপ্য রেডিও বেজে উঠল মহালায়ার ভোরে, মহিষাসুরমর্দিনীর ৯০ বছর পূর্তিতে চমক অধ্যাপকের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ সেই বহু প্রতীক্ষিত মহালয়া (Mahalaya)। পিতৃপক্ষের অবসান ঘটে শুরু হল মাতৃপক্ষের। ঢাকের তালে শুরু হয়ে গেল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার। আজ ভোর থেকেই বাংলার প্রতিটি ঘরে বেজে উঠেছে রেডিয়ো। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী (Mahishashurmardini) পাঠ না শুনলে সার্থক হয় না বাঙালির দুর্গাপূজা। বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রর সম্পাদনায় সেই মহিষাসুরমর্দিনী পাঠের অনুষ্ঠান এবার ৯০ বছরে পদার্পণ করল। আর তার স্মরণেই এবার ১২টি রেডিয়ো বাজিয়ে চলল মহিষাসুরমর্দিনী। পুরনো দিনের সেই নস্টালজিক অনুভূতি যেন ফিরে এলো এই মহালয়ার সকালে।

কোচবিহারের পাটকুরা এলাকার অলোক সাহা। নিজের বাড়িতে ১২টি রেডিয়ো বাজিয়ে শুনলেন এই বছরের মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল তাঁর ওই ১২টি রেডিওর সংগ্রহ। কোনও রেডিয়োর বয়স পার করেছে ৫০ বছর, কোনওটা আবার ৪৫ বছরেরও বেশি পুরনো। ঠিক এমনই বারোটি রেডিয়ো গমগম করে বেজে উঠেছে এদিন সকালে।

দেখে নেওয়া যাক অলোক সাহার সংগ্রহের ১২টি রেডিও কী কী?

১) ফিলিপ্স ভ্যালিয়ান্ট,ম১৯৬৪
২) ফিলিপ্স মেস্ট্রো ২, ১৯৬৯
৩) স্কিপার, ১৯৭২
৪) প্রাইড, ১৯৭২
৫) প্রিন্স, ১৯৭২
৬) প্রিন্স ডি লিউক্স, ১৯৭২
৭) ফিলেটিনা, ১৯৭২
৮) স্কিপার, ১৯৭৩
৯) আজাদ, ১৯৮২
১০) রাজা, ১৯৮২
১১) একিউ ৫১৬০, ১৯৯২
১২. এসপি ১৯৯৪, ২০১০

অলোকবাবু পেশায় বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক। মেঘালয়ের তুরা গভর্মেন্ট কলেজে কর্মরত। রেডিয়োর প্রতি ভালবাসা একদম ছোট বয়স থেকেই। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে রেখেছেন দুষ্প্রাপ্য সব রেডিয়ো। কোনওটা এনেছেন কলকাতা থেকে আবার কোনওটা এসেছে মহারাষ্ট্র থেকে। এমনকি তুফানগঞ্জ, বক্সিরহাট থেকেও বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করেছেন এই রেডিয়োগুলি । সবচেয়ে অবাক করার মত বিষয় হলো ১২ টি রেডিয়োই দারুণ সচল এত বছর পরও।

উত্তরবঙ্গে অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি। আর তার মধ্যেই চলছে মহালয়ার সকালের বিশেষ অনুষ্ঠান মহিষাসুরমর্দিনী। অদ্ভুত এক আবহ সৃষ্টি হয়ে পাটাকুরায়। ক্ষণে ক্ষণে চমকে উঠছে বিদ্যুৎ। আর তারই সঙ্গে ১২টি রেডিও থেকে এক সঙ্গে বাজছে মহিষাসুরমর্দিনী। তিনি জানান, বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রর সম্পাদিত মহালয়া এবার ৯০ বছরে পদার্পণ করল। সেই কারণে এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই এই অভিনব আয়োজন করেছেন তিনি।
অলোকবাবু বলেন, ‘১৯৩২ সালে শুরু হয় এই মহিষাসুরমর্দিনী। যা বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র পাঠ করেছিলেন। এটি বাঙালি মনে স্থায়ী ছাপ রেখে দিয়েছে। বাঙালি একটানা ৯০ বছর ধরে স্থায়ীভাবে এই রেডিয়ো শুনে চলেছে। এই বছর আমি আমার সংগ্রহের বারোটি রেডিয়ো বাজাচ্ছি। কারণ দূরদর্শনের দাপটে এখন রেডিয়োর জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই আমি চেষ্টা করছি রেডিয়োর জনপ্রিয়তা আবার মানুষের মধ্যে বাড়িয়ে তুলতে।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর