আজ তৃণমূলের ঐতিহাসিক ২১শে জুলাই শহীদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল। ১৯৯৩ সালের আজকের দিনে প্রাক্তন সিপিএম সরকারের বিরুদ্ধ রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করেছিল কংগ্রেসের কর্মীরা। তাঁদের দাবি ছিল স্বচ্ছ নির্বাচন করার জন্য যেন, সচিত্র ভোটার আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়। তাঁদের দাবি নিয়ে সকাল ১১ টা নাগাদ কংগ্রেসের কর্মীরা যখন রাইটার্স বিল্ডিং এর দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, তখন হঠাৎই পুলিশের তরফ থেকে গুলি চালানো শুরু হয়। এবং পুলিশের ছোড়া গুলিতে সেখানে ১৩ জনের মৃত্যু হয়।
সিপিএম এর প্রশাসনের ছোড়া গুলি আর কংগ্রেসের কর্মীদের মৃত্যুর পর ওই দিনকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করতে শুরু করেন তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জী। ওনার ওই দিনকে হাইজ্যাক করে নেওয়ার প্রধান কারণ হল, ১৯৯৩ সালে রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। উনি যেমন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের উপরে স্টিকার মেরে বাংলার আবাস প্রকল্প বলে চালিয়ে নিয়েছিলেন। তেমনই কংগ্রেসের কর্মীদের মৃত্যুকে হাইজ্যাক করে তৃণমূলের স্টিকার মেরে নিজেরাই শহীদ দিবস পালন করতে শুরু করে দেন।
আজ এই শহীদ দিবস সমাবেশে বিগত বছর গুলোর তুলনায় ভিড় অনেক কম দেখা যায়। আর এর প্রধান কারণ হল, লোকসভা ভোটে বিজেপির উত্থান। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে এরাজ্যে বিজেপি ১৮ টি আসন পেয়ে তাঁদের ক্ষমতা জাহির করেছে। আর বিজেপির এই উত্থানের কারণেই রাজ্যের দিক দিক থেকে তৃণমূলের সভায় লোকের অভাব দেখা গেছে।
এমনিতেই প্রতি বছর অভিযোগ উঠত যে, তৃণমূলের সভায় যোগ দিতে কলকাতায় এসে মানুষ সভায় যোগ না দিয়ে কলকাতার সৌন্দর্য দেখতে বেড়িয়ে পড়েন। আর এই জন্য আজ কলকাতায় তৃণমূলের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে লোক জড় করার জন্য অভিনব প্রচার শুরু করেছিলে তৃণমূল। তৃণমূলের ক্যাম্প গুলো থেকে মাইকিং করে বলে দেওয়া হচ্ছিল যে, ‘চিড়িয়াখানা দুপুরে খুলবে। আপনারা আগে গিয়ে সভায় যোগ দিন।” তৃণমূলের এই প্রচার ভাইরাল হতেই পতিক্রিয়া দেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
চিড়িয়াখানা সুত্রের খবর অনুযায়ী, আজ ঠিক সময় মতই খুলেছে চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আশিষ সামন্ত জানিয়েছেন, রবিবার ৭টা ৪৫ মিনিটে খুলেছে চিড়িয়াখানা। আলিপুর চিড়িয়াখানার তরফ থেকে তাঁদের সময় ঘোষণা হওয়ার পর প্রশ্ন উঠছে একটাই, তাহলে কি একুশে জুলাইয়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা?