J&K-র লিস্টে ২৫ লক্ষ ভিন রাজ্যের নতুন ভোটার, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জন্য দারুণ ব্যবস্থা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন (Jammu and Kashmir Election 2023) হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Election Commissioner) গত সপ্তাহে ঘোষণা করেন, রাজ্যের নতুন ভোটার তালিকায় প্রায় ২৫ লক্ষ নতুন ভোটারের নাম যুক্ত হতে যাচ্ছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন গ্রহণের পর দেখা যাচ্ছে বিরাট সংখ্যক মানুষ সেখানে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চেয়ে আবেদন করেছেন। জানা যাচ্ছে, আবেদনকারীদের প্রায় ২৫ লক্ষ ভোটার জম্মু-কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দাই নন।

বিরোধীদের দাবি, এই আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন সেনা, আধা সেনার আধিকারিক এবং জওয়ানেরা। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ওই রাজ্যে বসবাসকারী অ-কাশ্মীরিরাও। এদের মধ্যে অনেকেই পর্যটনের ব্যবসায় যুক্ত।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় উপত্যকা জুড়ে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা বিরোধীদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ঠিক হয় বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে আদালতে যাওয়া হবে। ফারুক নিজেই মামলা করবেন বলে জানা যাচ্ছে। কাশ্মীরের বিজেপি বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, ভোটার তালিকাকে হাতিয়ার করে রাজ্যটিকে অ-কাশ্মীরিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

Screenshot 2020 08 21 at 18.22.53 696x521 1

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে বিষয়টি তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। ধারা ৩৭০ এবং ৩৫ (এ) বাতিল হওয়ার পর কমিশন নতুন পদ্ধতিতে কাজ করেছে। আগে জম্মু-কাশ্মীরে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের জন্য আলাদা দুটি তালিকা তৈরি করতে হত। এবার তা হয়নি।

দুই নির্বাচনের জন্য আলাদা ভোটার তালিকার কারণ কী? কমিশন জানিয়েছে, সংবিধানের ধারা ৩৭০ তুলে নেওয়ার আগে বিধানসভা ভোটে ভিন রাজ্যের বাসিন্দারা ওই রাজ্যের ভোটার হতে পারতেন না। একমাত্র ওই রাজ্যের আদি বাসিন্দারাই বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতেন। কিন্তু লোকসভার ক্ষেত্রে সেই নিষেধ ছিল না।

এবার বিধানসভা ভোটের জন্য যে ভোটার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে তাতে আর আগের ভেদাভেদ থাকছে না। ফলে জম্মু-কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী যে কোনও ব্যক্তিই ভোটার তালিকায় নাম তোলার অধিকারী হয়েছেন দুই নির্বাচনের জন্যই। ভারতীয় সংবিধানের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি কোনও এলাকায় ছয় মাসের বেশি টানা বসবাস করলে ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য তাঁকে সেখানকার সাধারণ বাসিন্দা বলে গণ্য করা হয়। এখন শুধু ভোটার তালিকায় নাম তোলাই নয়, ওই রাজ্যে জমি-বাড়ি কেনাবেচাতেও এখন আর ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের কোনও বাধা নেই।

নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) জানাচ্ছে, বাইরে থাকা কাশ্মীরের ভোটারদের জন্য দুই ধরণের ফর্মের ব্যবস্থা রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ভোটের দশদিন আগে কমিশনের তরফ থেকে ফর্ম এম (ব্যক্তিগতভাবে ভোট দেওয়া) ও ফর্ম ১২ (পোষ্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়া) বণ্টন করা হবে। যাতে কোন জায়গায় কতগুলি ইভিএম বা পোষ্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করতে হবে তা বোঝা যায়। সারা দেশে এমন বাস্তুচ্যুত কাশ্মীরি পণ্ডিতের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার। যারা কাশ্মীরের ভোটার তালিকায় রয়েছেন। কমিশনের তরফে প্রায় দু’লক্ষ ফর্মের ব্যবস্থা রাখা হবে।

প্রশ্ন যেখানে : সেনা ও আধা সেনার জওয়ান ও অফিসারদের নাম কাশ্মীরের ভোটার তালিকায় তোলায়। প্রতিরক্ষার কাজে যুক্ত কর্মীদের জন্য রয়েছে পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা। এই ব্যবস্থায় তাঁরা নিজের রাজ্যের নির্বাচনেই ভোট দিতে পারেন।

এই বিষয়ে বিরোধীদের দাবি, বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতা দখল করতে সেনা, আধা সেনাকে ভোটার বানিয়ে নির্বাচনী স্বার্থ পূরণ করতে চাইছে। এর আগে কোনও রাজ্যে এমন হয়নি। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি দমনে সেনা ও আধা সেনার জওয়ানেরা বছরের পর বছর কর্মরত থাকেন। কিন্তু কোথাও তাঁদের সেই এলাকার ভোটার করা হয়নি। তাহলে কাশ্মীরে কেন?


Sudipto

সম্পর্কিত খবর