বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক দুর্নীতির (Corruption) বহর! এবার বঙ্গে দুর্নীতির আরেক নিদর্শন। প্রায় চার বছর আগে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন পদে চাকরির পরীক্ষা নেয় কৃষ্ণনগর পুরসভা (Krishnanagar Municipality)। মোট ৭২ জনকে নিয়োগ করা হয় সেই সময়। তবে এই নিয়ে প্রথম থেকেই তৃণমূল (TMC) পরিচালিত ওই পুরসভার বিরুদ্ধে উঠেছিল দুর্নীতির অভিযোগ। এবার সেই পরীক্ষা নিয়ে আরটিআই হওয়ায় সামনে এলো মাথা ঘুরে যাওয়ার মত তথ্য। মিলছে না সেই পরীক্ষার ২৫ হাজার উত্তরপত্রের। এমনই জানিয়েছেন পুরপ্রধান।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে কৃষ্ণনগর পুরসভার সেই পরীক্ষায় অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার থেকে মজদুর পর্যন্ত ১৭ টি পদে ৭২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। সম্প্রতি, তথ্য জানার অধিকার আইনে পরীক্ষার স্বচ্ছতা তুলে আনতে আবেদন করেছিলেন সেই পরীক্ষার কিছু চাকরিপ্রার্থী। তার জবাবেই বর্তমান পুরসভার পুরপ্রধান রিতা দাস জানান , “আরটিআই হওয়ার পর আমি প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার কাছে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানতে চাই। তিঁনি জানান, সব কিছু দফতরের জিম্মায় আছে। তিঁনি কিছু জানেন না। অসীমবাবুর জবাব পাওয়ার পর প্রধান করণিকও লিখিত ভাবে জানান যে, ওএমআর শিট বিষয়ে কিছু তাঁর জানা নেই।”
অন্যদিকে এই বিষয়ে একজন আরটিআইকারী চাকরিপ্রার্থী সঞ্জয় সরকারের অভিযোগ, “চাকরি পাওয়া দূরের কথা, পরীক্ষার ফল পর্যন্ত জানতে পারিনি।” একই অভিযোগ করে আরেক চাকরিপ্রার্থী অপূর্বলাল বিশ্বাসও সরব হন । পাশাপাশি এই নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছেন চাকরিপ্রার্থী সুমন বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, “আমি ২০১৯ সালে আরটিআই করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আবেদনপত্র জমা তো নেওয়াই হয়নি, উপরন্তু আমাকে ঘর থেকে বার করে দেওয়া হয়।” পাশাপাশি আরেক চাকরিপ্রার্থী অপূর্বলাল বলেন, “বিশ্বাসই করতে পারছি না যে পুরসভার কাছে ওএমআর শিট নেই! সেগুলো সরিয়ে ফেলা হল নাকি হাওয়ায় মিলিয়ে গেল?”
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে স্থানীয় বিরোধী শিবির। এই প্রসঙ্গে, পুরসভার বিরোধী কংগ্রেস দলনেত্রী, শান্তশ্রী সাহার অভিযোগ , “যখন নিয়োগ হচ্ছিল, তখনই লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে অযোগ্যদের কাছে চাকরি বিক্রির কথা জানা যাচ্ছিল। এ বার মৌচাকে ঘা পড়েছে।” পাশাপাশি বিজেপি কাউন্সিলর বর্ণালী গুইন দত্তের দাবি, “বড় দুর্নীতি গোপন করতে উত্তরপত্রগুলি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।” উত্তরপত্র যে পাওয়া যাচ্ছে না, পুলিশকে তা জানানো হয়নি কেন? পুরপ্রধানের বক্তব্য, “আমি একা সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বোর্ড অব কাউন্সিলরের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে সেই মতো পদক্ষেপ করব। “