বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে প্রতিনিয়ত পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় প্রত্যক্ষভাবে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা। এমতাবস্থায়, এই বিপুল খরচ সামলাতে সবাই বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকেই ঝুঁকছেন। এদিকে, গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখেই সংস্থাগুলিও নতুন নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে আসছে বাজারে। শুধু তাই নয়, অনেক বিদেশি সংস্থাও ভারতের এই বৃহৎ বাজারের সুযোগ দেখে এদেশে কারখানা গড়ারও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সেই রেশ বজায় রেখেই এবার ভারতে বৈদ্যুতিক তিন চাকার গাড়ির কারখানা তৈরি করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করল ক্যালিফোর্নিয়ার বিলিতি ইলেকট্রিক (Biliti Electric)। শুধু তাই নয়, এটি তৈরি হওয়ার পর বিশ্বের বৃহত্তম ইলেকট্রিক থ্রি-হুইলার প্ল্যান্ট হিসেবে বিবেচিত হবে এই কারখানা। জানা গিয়েছে যে, তেলেঙ্গানায় ২০০ একর জমির উপর গড়ে তোলা হবে ওই কারখানাটি। প্রতি বছর এখান থাকে ২,৪০,০০০ টি গাড়ি উৎপাদিত হতে পারবে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিরাট এই কারখানা স্থাপনের ফলে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি ৩ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। এই প্রসঙ্গে বিলিতি ইলেকট্রিকের সিইও রাহুল গয়াম জানিয়েছেন, “তেলেঙ্গানায় আমাদের ইলেকট্রিক ভেহিকেলের কারখানা তৈরি হতে চলেছে এবং এই কথা জানাতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত।”
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, “সমগ্র বিশ্বে আমরা সর্বমোট ১.২ কোটিরও বেশি টাস্টম্যান গাড়ির ডেলিভারি দিয়েছি। আগামীতে আরও লক্ষ্যমাত্রা বাড়াবো আমরা। আমাদের সংস্থার তৈরি ব্যাটারি এবং মোটর যেমন শক্তিশালী, তেমন ডিজাইনের দিক থেকেও সম্পূর্ণ অনন্য।”
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, প্রথমে দু’টি পর্যায়ে এই কারখানাটি নির্মাণ করা হবে। কারখানাটিতে সমস্ত গাড়ির সাথে পণ্যবাহী TaskmanTM এবং যাত্রীবাহী UrbanTM গাড়িও নির্মিত হবে। পাশাপাশি এখান থেকেই গাড়িগুলি আবার বিদেশের বাজারেও রফতানি করা হবে। মূলত, প্রথম পর্যায়ে ১৩.৫ একর জমির উপর কারখানা গড়ে তোলা হবে। বার্ষিক ১৮,০০০ গাড়ি উৎপাদন ক্ষমতার এই কারখানাটি ২০২৩ থেকেই চালু হয়ে যাবে।
অপরদিকে, ২০০ একর জমির উপর বৃহত্তর কারখানাটি ২০২৪ সাল নাগাদ চালু হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১-এ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে হায়দরাবাদের গয়াম মোটর ওয়ার্ক (GMW)-এর সাথে যৌথভাবে তিন চাকার গাড়ি তৈরি করছে এই সংস্থা। এছাড়াও, ভারতে ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন, জোমাটোর মতো জনপ্রিয় অনলাইন বিপণনকারী সংস্থাগুলিও এই গাড়ি ব্যবহার করে।
শুধু তাই নয়, ভারতের পাশাপাশি ব্রিটেন, আমেরিকা, ইউরোপ, জাপান, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, আফ্রিকা এবং পর্তুগালের বাজারেও বিক্রি করা হয় এই সংস্থার গাড়িগুলি। এই প্রসঙ্গে তেলেঙ্গানার শিল্পমন্ত্রী কেটি রামা রাও জানিয়েছেন, “দু’বছর আগে যখন আমরা বৈদ্যুতিক গাড়ির নীতি লঞ্চ করেছিলাম, তখনই আমাদের লক্ষ্য ছিল তেলেঙ্গানাকে বৈদ্যুতিক গাড়ির নির্মাণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। বিলিতির মতো সংস্থাগুলির হাত ধরে এখন সেই লক্ষ্য পূরণ হতে চলেছে।”