বাংলা হান্ট ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকারের উজ্জ্বলা প্রকল্প বর্তমানে ঘরে ঘরে এলপিজি সিলিন্ডার (LPG Cylinder) পৌঁছে দিয়েছে। এদিকে, এইসব সিলিন্ডারে থাকা গ্যাস অত্যন্ত দাহ্য হওয়ায় এগুলিতে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যার ফলে প্রাণহানির ঘটনাও সামনে আসে। এমন পরিস্থিতিতে এই সিলিন্ডার ব্যবহার করার সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। মূলত, সঠিক তথ্যের অভাবে এবং রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটির কারণে প্রায়ই সিলিন্ডার ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও, এটিও জেনে রাখা উচিত যে, যদি একটি এলপিজি সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটে বা গ্যাস লিকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে গ্রাহক হিসেবে আপনার কি করণীয়? বেশিরভাগজনই এই সম্পর্কে জানেন না যে, পেট্রোলিয়াম সংস্থাগুলি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ লক্ষ টাকার বীমার সুবিধা দেয়। সর্বোপরি এর জন্য গ্রাহকদের কোনোরকম প্রিমিয়ামও দিতে হবে না।
কারা এটি পাবেন?
পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলি এলপিজি সংযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের পার্সোনাল অ্যাক্সিডেন্ট কভার প্রদান করে। মূলত, এলপিজি সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক বা বিস্ফোরণের কারণে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এই বীমার জন্য পেট্রোলিয়াম কোম্পানিগুলির সঙ্গে বীমা কোম্পানিগুলির অংশীদারিত্ব রয়েছে। তেল বিপণন সংস্থাগুলি গ্যাস সিলিন্ডার গ্রহণকারী সমস্ত গ্রাহকদের এই সুবিধা প্ৰদান করে।
যদিও, গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারির সময়ে গ্রাহককেও সতর্ক থাকতে হবে এবং ডেলিভারি নেওয়ার সময় সিলিন্ডারটি ঠিক আছে কিনা সেটিও পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। এমতাবস্থায়, গ্রাহকের বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডারের দুর্ঘটনার কারণে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতির ক্ষেত্রে পার্সোনাল অ্যাক্সিডেন্ট কভার দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ওই দুর্ঘটনায় গ্রাহকের সম্পত্তি/বাড়ির ক্ষতি হলে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইন্স্যুরেন্স ক্লেম করা যায়।
কিভাবে করবেন ৫০ লক্ষ টাকার ক্লেম:
দুর্ঘটনার পরে ক্লেম করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদ্ধতিটি myLPG.in (http://mylpg.in)-এই সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। ওয়েবসাইট অনুসারে, এলপিজি সংযোগ নেওয়ার পরে গ্রাহকের প্রাপ্ত সিলিন্ডারের সাথে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তবে সেই ব্যক্তি ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা পেতে পারেন। পাশাপাশি, ওই দুর্ঘটনায় প্রত্যেক আহত ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কারোর মৃত্যু হলে, পার্সোনাল অ্যাক্সিডেন্ট কভার হিসেবে প্রতি ব্যক্তি পিছু ৬ লক্ষ টাকার ক্লেম করা যায়। পাশাপাশি, প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য চিকিৎসা খরচ হিসেবে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়, যার মধ্যে প্রত্যেক আহত ব্যক্তি পাবেন ২ লক্ষ টাকা করে।
ক্লেম পেতে কি করতে হবে?
এমতাবস্থায়, দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমে নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন এবং আপনার এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরকে জানাতে হবে। এরপর দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করবে সেই এলাকার সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অফিস। এলপিজি সিলিন্ডারের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে ডিস্ট্রিবিউটর বা এরিয়া অফিস তা বিমা কোম্পানিকে জানাবে। তদন্তের রিপোর্ট দেখার পর, কোম্পানিতে একটি ক্লেম ফাইল করা হয়, যার জন্য গ্রাহককে সরাসরি কোম্পানির সাথে আবেদন বা যোগাযোগ করার প্রয়োজন নেই। সবশেষে এফআইআরের একটি কপি, আহতদের জন্য চিকিৎসার বিল এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ডেথ সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে।