বাংলা হান্ট ডেস্ক : সালবাগানে নিখোঁজ হওয়া কিশোর সুরজিৎ রুইদাস ওরফে সবুর মৃতদেহ (Child Labour) মিলল প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে, কলকাতার বালিগঞ্জে (Ballygunge) একটি পরিত্যক্ত রেল ওয়াগনের মধ্যে! সূত্রের খবর, মৃতদেহটি মারাত্মকভাবে পোড়া অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওয়াগনের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগে, আর সেখানেই প্রাণ হারায় সবু। তবে এই ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়—এটাই দাবি করছে স্থানীয়রা ও পরিবার। তাদের মতে, এই মৃত্যু এক চক্রের নির্মম পরিণতি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সালবাগান এলাকার মহম্মদ নিজু আনসারি (Niiju Ansari) দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের ব্যবহার করে রেলওয়ে ওয়াগন থেকে স্ক্র্যাপ, যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী চুরি করত। এই কাজে তাকে ছাড় দিত তৃণমূলের (Tmc Crime Link) এক প্রভাবশালী নেতা—এই দাবি করেছেন কিশোরের বাবা মিঠুন রুইদাস। মিঠুনবাবুর কথায়, “নিজু নিজে কখনও ওয়াগনে ওঠে না। সে ছোট ছেলেদের দিয়ে এই সব করায়। আমার ছেলেও সেই ফাঁদে পড়ে গিয়েছিল। ওর সঙ্গে মোবাইল ছিল, সেটা বন্ধ। পুলিশকে বলেছি, ও নিখোঁজ হওয়ার পরই ভাইরাল হয়েছে সেই ওয়াগন চুরির ভিডিও।” সবুর বন্ধুদের অনেকে জানিয়েছে, তারাও আগে নিজুর সঙ্গে এমন কাজ করেছে, সামান্য টাকার লোভে। কিন্তু ইলেকট্রিক ওয়াগনে ওঠার পর শর্ট সার্কিটে বিস্ফোরণ ঘটে—সবু আর বেরোতে পারেনি। মৃতদেহের গন্ধ থেকে বিষয়টি নজরে আসে রেল নিরাপত্তা কর্মীদের।
দেহ চলে গেল বালিগঞ্জে! প্রশ্ন উঠছে, এতদূর কীভাবে গেল?
প্রশ্ন উঠছে, দুর্গাপুরে নিখোঁজ কিশোরের দেহ বালিগঞ্জে কীভাবে এল? রেল পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ওয়াগনটি স্ক্র্যাপ হিসেবে ট্রান্সপোর্ট হচ্ছিল। হয়তো তার আগেই শিশুটি তাতে উঠে পড়েছিল লুকিয়ে, কিংবা কেউ ইচ্ছা করে তাকে সেখানে পাঠিয়েছিল। পুলিশ এখন গোটা চক্রটির পেছনে তদন্ত শুরু করেছে। নিজু আনসারি পলাতক, তার মোবাইলও সুইচ অফ। তৃণমূলের স্থানীয় নেতার নামও উঠে এসেছে অভিযোগে—যদিও দলীয়ভাবে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন : জাতীয় পতাকা অবমাননার পর এবার খুন! চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে প্রধান আসামির তকমা দিল বাংলাদেশ

শোকাহত পরিবার, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা, প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন
সবুর মৃত্যুর পর গোটা সালবাগান ও দুর্গাপুরে শোক ও ক্ষোভের আবহ। মানুষ রাস্তায় নেমে দাবি তুলেছেন—এই চক্রে জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতার করতে হবে। এক প্রতিবেশী বলেন, “এটা একটা র্যাকেট, যেখানে শিশুদের ব্যবহার করা হয়। ওরা গরিব, তাই ওদের জীবন মূল্যহীন হয়ে গেছে?” সবুর মৃত্যুর ঘটনা এক গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রশ্ন তোলে—কে দায়ী এই হত্যার জন্য? শুধুই নিজু আনসারি, নাকি তাকে রক্ষা করা রাজনৈতিক ছত্রছায়াও দায়ী? এখন দেখার বিষয়, পুলিশ এবার আদৌ সত্যি সামনে আনতে পারে কিনা।