বাংলাহান্ট ডেস্কঃ আসানসোলে (Asansol) অস্ত্র কারখানার সন্ধান পেল কলকাতা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) (STF)। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে এসটিএফ, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি থানা ও নিয়ামতপুর ফাঁড়ি যৌথ ভাবে অভিযান করে। সেই অভিযানে নিয়ামতপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত নুরনগরে বিশাল অস্ত্র তৈরি কারখানার হদিস পায় পুলিশ। বিপুল সংখ্যায় অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে তারা। গ্রেফতার করেছে ছ’জনকে।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১০০টা তৈরি অস্ত্র, অন্তত সাড়ে তিনশোটি অর্ধ নির্মিত অস্ত্র, একটা লেদ মেশিন এবং একটা ঝালাই করার যন্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় (kolkata) এসটিএফের এক আধিকারিক বিহারের মুঙ্গের জেলার বাসিন্দা সৌকত আনসারিকে গ্রেফতার করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসানসোলের নিয়ামতপুর এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানার কথা জানতে পারে পুলিশ।
লকডাউনের মধ্যে এসটিএফের এক আধিকারিক সাধারন নাগরিকের বেশে নিয়ামতপুর এলাকায় সন্ধান চালাতে থাকেন। সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়ার পরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাহায্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় হানা দেয় নুরনগর এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধানবাদের ঝরিয়ার বাসিন্দা মহম্মদ ইসরার আহমেদ, মহম্মদ আরিফ, ধানবাদের হরিনার বাসিন্দা সুরজ সাউ ও উমেশ কুমার এবং ধর্ণার বাসিন্দা অরুণকুমার ভার্মাকে গ্রেফতার করেছে।
সাতবছর আগে নুরনগরের তংগলিতে দোতলা বাড়ি বানিয়ে থাকতেন রেলপারের বাসিন্দা মহম্মদ আসরফ খান ওরফে অফসর। আসরফের জেনারেটারের ব্যবসা তবে বেশির ভাগ সময় তিনি দিল্লিতে থাকতেন। প্রায় এক বছর আগে আসরফের ঘর মাসিক পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া নেয় মহম্মদ ইসরার নামে এক ব্যক্তি। পরে আসরফের বাড়ির খালি জায়গায় নিজের টাকায় সে ঘর বানিয়ে নেয়। তখন তার বাড়ি ভাড়া দু’হাজার টাকা কমিয়ে মাসিক তিন হাজার টাকা করা হয়।
আসরফকে বলা হয়েছিল ওই ঘরে লেদমেসিনে ওয়াশার বানানো হবে। একথা শুনে আসরফের মনে কোনও সন্দেহ হয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকা ঘনবসতি পূর্ণ হওয়ার জন্য কারও মনে সন্দেহ হয়নি। কারখানা থেকে অর্ধ নির্মিত সাত মিলিমিটার পিস্তল বিহারের মুঙ্গেরে যেত। সেখানে পিস্তলের ট্রিগার লাগিয়ে অস্ত্র সম্পূর্ণ করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হত। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছ’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
লকডাউনের কারণে যখন সব দোকান ও কারখানা বন্ধ তখন এই কারখানায় তার কোনও প্রভাব পড়েনি। কারখানা পুরোদমে চালু ছিল। পুলিশ অস্ত্র তৈরি করার যন্ত্রের পাশাপাশি অন্তত সাড়ে তিনশোটি অর্ধ নির্মিত সেভেন মিমি পিস্তল বাজেয়াপ্ত করেছে।