বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ২০১৯ সালেই নিজের দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন লাভপুরের (Labpur) তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। দলবদলের গুঞ্জনের মধ্যে তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির সদর দপ্তর থেকে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেন। তবে সেই সময়ই তাঁকে নিয়ে স্থানীয় বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। তখন স্থানীয় বিজেপি নেতা সুবীর মন্ডল প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, ‘‘মনিরুল ইসলাম তৃণমূলে (TMC) থাকাকালীন আমাদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তাতে কিছুতেই দলে ওঁর অনুপ্রবেশ মেনে নেব না। কেউ যদি দিল্লি থেকে ওঁকে দলে ঢোকান, তা হলে তিনিই তাঁর কাজের ক্ষেত্র ঠিক করে দেবেন। লাভপুরে ওঁকে কাজ করতে দেব না!’’
তারপর এখন কিছুদিন আগেই ফের তাঁকে হেস্টিংসে বঙ্গ বিজেপির কার্যালয়ে দেখা গিয়েছিল। সেখান থেকে তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়ে একাধিক ইস্যুতে বিঁধেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও একুশের নির্বাচনে টিকিট মেলেনি লাভপুরের এই বিদায়ী বিধায়কের। তাই এবার সরাসরি নির্দল প্রার্থী (Independent Candidate) হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন তিনি (Monirul Islam)। মনিরুল জানান, ‘তিনি অসুস্থ থাকাকালীন দেখেছেন লাভপুরের মানুষ তাঁকে কতটা ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসার টানেই তিনি এদিন বোলপুর এসডিও অফিসে লাভপুরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন।
সরকারি ভাবে তিনি এখনও বিজেপি (BJP) থাকলেও, তাঁর নির্দলে প্রার্থী হওয়া নিয়ে জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা জানান, ‘মনিরুল ইসলাম ভালো মানুষ। তিনি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে ওনার সঙ্গে কথা বলব। তবে এবারের ভোটে মানুষ বিজেপির সঙ্গে আছে।” প্রসঙ্গত, শাসকদল তৃণমূল এই নির্বাচনে যে আসনগুলিতে নিশ্চিত জয় দেখছে, তার মধ্যে এই আসনও একটি। ফলে তৃণমূল-বিজেপি-নির্দল মিলে এবারের নির্বাচনে জোর টক্কর হতে চলেছে লাভপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি।
উল্লেখ্য, রাজ্যে নির্বাচনী দামামা বাজতেই জোর কদমে প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন একসময়ের অনুব্রতের কাছের লোক, তথা বিজেপি নেতা মনিরুল ইসলাম। ছেলে আসিফকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে ছিলেন, ‘এই কেন্দ্রে বিজেপি যাকেই প্রার্থী করুক না কেন, তাঁকে ভোটে জেতানোই হবে তাঁর লক্ষ।’ এমনকি লাভপুর থানায় প্রবেশে তাঁর উপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় , মনিরুল আহমেদপুর থেকেই বিজেপির হয়ে ভোট প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন। তবে গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, এবারের নির্বাচনে নিজে লাভপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী না হলেও ছেলে আসিফকে প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বিজেপি ওই কেন্দ্রে বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে (Biswajit Mondal) প্রার্থী করায় নিজেই এবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে লাভপুরের ভোটের ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নেন।