বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সারাদেশে ইতিমধ্যেই ত্রাহি ত্রাহি রব সৃষ্টি করেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। একদিকে যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের হার তেমনি বাড়ছে মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় সমস্ত রেকর্ড ভেঙে আমাদের এই রাজ্যেই নতুন করে করােনা সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ১৩৬ জন । দেশের সার্বিক চিত্রটি যে আরো ভয়ঙ্কর তা বলাই বাহুল্য। করোনার প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় আরো অনেক বেশি সংক্রামক এবং মারাত্মক এই দ্বিতীয় ঢেউ। এমতাবস্থায়, লকডাউনই কি তবে একমাত্র উপায়? গতবছর দেশব্যাপী লকডাউনের পর এখনো ধুঁকছে ভারতের অর্থনীতি। এই মুহূর্তে ফের একবার লকডাউন হলে যে রীতিমতো সমস্যায় পড়বে আমজনতা এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু দিন দিন যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড তা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কপালে।
সার্বিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে লকডাউনের পক্ষে মত দিয়েছেন আইসিএমআর প্রধান বলরাম ভার্গবও। তার মতে কোভিডের এই মারাত্মক সংক্রমণের হারকে রুখতে এই মুহূর্তে লকডাউন একান্ত জরুরী। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্য যে যে এলাকায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের বেশি সেই অঞ্চলগুলোতেই লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে প্রাথমিক হিসেবে সামনে আসছে দেশের প্রায় ৭১৮ টি জেলা। যার মধ্যে রয়েছে কলকাতা, দিল্লী, মুম্বাই বেঙ্গালুরুর মতো প্রধান শহরগুলিও। এখন এই সমস্ত শহরে লকডাউন হলেই যে ফের একবার বড় ধাক্কা খাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়ায় ইন্টারভিউতে আইসিএমআর প্রধান জানান, ”যে যে এলাকায় করোনার পজিটিভিটি রেট অর্থাৎ পরীক্ষার সঙ্গে সংক্রমণের তুলনামূলক হার ১০ শতাংশের বেশি, সেই সেই এলাকায় অবিলম্বে লকডাউন করা উচিত।” মূলত ৬ থেকে ৮সপ্তাহের জন্য লকডাউন করার পক্ষপাতী তিনি। এর আগে দেশের কোন কোন অঞ্চলে লকডাউন করা উচিত তা নিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে একটি ড্রাফটও জমা দিয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
ভারতের প্রায় ১৫০ জেলায় এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশেরও বেশি। পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই অর্থ মন্ত্রকের পরামর্শ নিয়ে এইসব এলাকাতে কেন্দ্র সরকারকে লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই জানিয়েছিলেন লকডাউনকে শেষ অস্ত্র হিসেবেই ব্যবহার করবেন তারা। এক্ষেত্রে নিজেদের মতো কোরে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল রাজ্য সরকারগুলিকেও। তবে এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না দেশব্যাপী লকডাউনের আশঙ্কা। কোভিড সংক্রমণের হার রোজ এভাবে বাড়লে শেষ পর্যন্ত লকডাউনের শরণাপন্ন হতে হবে সরকারকে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কঠোরভাবে লকডাউনের পক্ষপাতী তিনি না হলেও, মানুষজনকে মেনে চলতে হবে বিধি-নিষেধ। ইতিমধ্যেই বন্ধ করা হয়েছে রেলও। এখন আগামী দিনে কি পরিস্থিতি তৈরি হয় সেদিকে নজর থাকবে সকলেরই। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেই লকডাউন এর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র সরকার।