বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে উঠে এসেছে নারদ কান্ডে জেরে প্রাক্তন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, এবং তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের গ্রেপ্তারি। ২০১৬ সালের স্টিং ফুটেজ অনুযায়ী কোন এক অচেনা ব্যক্তির হাত থেকে টাকা নিতে দেখা যায় তৃণমূলের বেশকিছু তাবড় তাবড় নেতা-মন্ত্রীদের।
তাদের মধ্যেই ছিলেন এই চার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাও। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তদন্ত চালানোর পর বিচার প্রক্রিয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছিল সিবিআই। সিবিআইয়ের বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে গত ৭ মে সিবিআইকে এই অনুমতি দেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সেই ভিত্তিতে এবার দাখিল করা হবে চার্জশিটও। পাশাপাশি নিজের গতিতে এগিয়ে চলছে তদন্ত প্রক্রিয়া।
সিবিআই-এর এই বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, নারোদা স্টিং অপারেশন যেখানে দেখা যাচ্ছে জনপ্রতিনিধিরা টাকা নিতে গিয়ে ক্যামেরায় ধরা পড়েছেন। তদন্তের পর এদের উপর বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, গত ৭ মে সেই অনুমতি দিয়েছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সেই সূত্র ধরেই আজ সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘেরাও করে একের পর এক চার নেতা মন্ত্রীকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সকালে ফিরহাদের বাড়িতে পৌঁছায় সিবিআইয়ের একটি দল। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মন্ত্রীকে।
অফিসিয়ালি কিছু জানানো না হলেও বাইরে বেরিয়ে ফিরহাদ জানান, নারোদা কাণ্ডে তাকে গ্রেপ্তার করছে সিবিআই। শুধু ফিরহাদ, শোভন, মদন এবং সুব্রতই নয় এই তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা এসএমএইচ মির্জারও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্যে। গ্রেপ্তারের পর এই প্রত্যেকের সঙ্গে দেখা করতে নিজাম প্যালেসে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, এভাবে গ্রেপ্তার অনৈতিক এই দাবিতে এদিন ধর্নায়ও বসেন তিনি। এভাবে চলতে থাকলে তাকেও যেন গ্রেফতার করা হয় এই আর্জিও প্রকাশ করেন মমতা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মুখ খুলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃত্বও। রাজ্যপালের এভাবে অনুমতি দেওয়াকে অবৈধ’ বলে উল্লেখ করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায় তথা সৌগত রায়রা। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের মতে, করোনা সামলাতেই চূড়ান্ত ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেই কারনেই এইসব সত্য থেকে চোখ ঘোরাতেই এ ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ কাজ করছে সরকার।
তবে অবশেষে এবার নিজের পক্ষ রাখল সিবিআই। পরিষ্কার জানানো হলো, বিচার প্রক্রিয়ার স্বার্থেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই চার হেভিওয়েটকে। যদিও তার পর থেকেই যথেষ্ট অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। নিজাম প্যালেসের সামনে এই মুহূর্তে জমায়েত করেছেন কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। চলেছে ইট তথা কাচের বোতল ছোঁড়াছুঁড়িও। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল শুনানির কথা ঘোষণা করেছে ব্যাঙ্কশাল কোর্টও। এখন আগামী দিনেই পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সে দিকে নজর থাকবে সকলের।