বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই সত্বেও ফের একবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। স্বপ্নে অনেকখানি আশা ভঙ্গ হয়েছে বিজেপির। বাংলায় উত্তর প্রদেশের থেকেও বড় জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভোটের আগে যেভাবে তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক নেতা যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। তাতে সেই স্বপ্নের গাছ যে কিছুটা জল বাতাস পেয়েছিল এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ভোটের পরে দেখা যায় বেশিরভাগ দলবদলু নেতাই ধরে রাখতে পারেননি নিজেদের জয়যাত্রা। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবির ঘোষাল থেকে শুরু করে বিধায়ক পদ দখল করতে পারেননি কেউই। এমনকি হেরেছেন অনেক স্টার ক্যাম্পেইনারও।
নির্বাচনের পরে বাংলায় দেখা দিয়েছিল ভোট-পরবর্তী হিংসা। আর তার ফলেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন বিজেপির জয়ী বিধায়করাও। অনেকের কাছে যদিও ছিল কেন্দ্রের ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা বাহিনী। তবে বেশির ভাগ নেতাই এই সুবিধা পাননি। ভোটের পর অবশ্য ৬৬ জন বিধায়ককে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দান করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তরফে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে হেরে যাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে। অনেকেই তৃণমূল থেকে দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন নির্বাচনী টিকিট পেতে। নির্বাচনী টিকিট পেয়েও ছিলেন তারা, কিন্তু বাংলার মানুষ জনমত দেয় তাদের বিপক্ষে। এমতাবস্থায়, তাদের জন্য নিরাপত্তা বলয় রাখা হবে কিনা সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। নির্বাচনের আগে হেস্টিংসের যেভাবে শোরগোল ছিল এখন তো অনেকটাই ফাঁকা। এমনকি দলের মিটিংয়েও দেখা যাচ্ছে না হেরে যাওয়া অনেক প্রার্থীকেই।
যেমন দেখতে পাওয়া যায়নি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা প্রবীর ঘোষালকে। অনুপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও। তবে এখন দলের অন্দরে বড়োসড়ো প্রশ্ন, অন্য দল থেকে আসা নেতারা কেন এখনো নিরাপত্তা পাবেন? অন্যদিকে অন্যদল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার সময় অনেকেই শর্ত রেখেছিলেন, নিরাপত্তা দিতে হবে বিজেপিকে। আর সেই অনুযায়ী ভোটের আগে ওয়াই ক্যাটাগরি সিকিউরিটিও পেয়েছিলেন তারা। এদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় ধরে রেখেছেন নিজেদের বিধানসভা। তাদের জন্য সিকিউরিটি আগে থেকেই ছিল। কিন্তু দলের অন্দরে প্রশ্ন হেরে যাওয়া বিজেপি নেতাদের নিয়ে। দলের একাংশ বলছে, যারা হেরে গিয়েছেন তাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে ব্যবহার করা হোক যারা জিতেছেন তাদের জন্য। অন্যদিকে কার্যত নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন ভোটের আগের দলবদলুরা। ইতিমধ্যেই অবশ্য সরলা মুর্মু, সোনালি গুহর মত অনেকেই ফের একবার তৃণমূলের ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে দল ছেড়েছেন দীপেন্দু বিশ্বাস। এখন আগামী দিনে এই সমীকরণ কি দাঁড়ায় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।