বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের জীবন্ত সরস্বতী বিদায় নিয়েছেন গত রবিবার। দেহাবসান হয়েছে কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকরের (lata mangeshkar)। কিছুদিন কেটে গেলেও এ শোক ভুলতে পারছে না দেশবাসী। গায়িকার প্রয়াণে যে শূন্যতা সৃষ্টি হল ভারতীয় সঙ্গীত জগতে তা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। সাক্ষাৎ মা সরস্বতী যেন লতা মঙ্গেশকর রূপে এসেছিলেন দেশে। ৯২ বছর বয়সেও তাঁর কণ্ঠের সুর শিহরন জাগাত মনে।
কোকিল কণ্ঠীর সুরেলা কণ্ঠ শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্ববাসীর কাছে ছিল বিস্ময় স্বরূপ। আর পাঁচটা সাধারন মানুষের থেকে কী এমন আলাদা ছিল লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠে, যা এমন সম্মোহন তৈরি করত প্রতিটি গানে? এ নিয়ে গবেষণা, বিশ্লেষণ কম হয়নি। কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্যও উঠে এসেছে। জেনে নেওয়া যাক কী সেই তথ্য।
The World.org র রিপোর্টে, ম্যাসাচুসেটস হাসপাতালের ভয়েস সেন্টারের পরিচালক স্টিভেন গিটেলসের বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর দাবি, ভোকাল মাসল মানুষের সুরেলা কণ্ঠের নেপথ্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ভোকাল মাসল ব্যাপারটা আর কিছুই নয়, ল্যারিঙ্কস ওরফে ভয়েস বক্সে থাকা মাংসপেশি।
পাতলা মেমব্রেন দিয়ে তৈরি এই ল্যারিঙ্কস বা ভয়েস বক্স। কথা বললে বা গান গাইলে ভাইব্রেট হতে শুরু করে ল্যারিঙ্কস। যত বেশি সময় ধরে একে ভাইব্রেট করা যাবে, কণ্ঠ ততই সুরেলা হবে। আবার ল্যারিঙ্কসের ভালভাবে কাজ করার নেপথ্যে রয়েছে ফুসফুসের অবদান। ফুসফুস থেকে যে বায়ু ভোকাল ফোল্ডে এসে পৌঁছায় তাকে প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে স্বর সৃষ্টি করে।
শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করা এবং ধরে রাখা গানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বহুক্ষণ শ্বাস ধরে রাখতে পারতেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। যতই উঁচু সুর হোক না কেন, এতটুকুও কাঁপত না তাঁর গলা। দক্ষ শিল্পীর অন্যতম গুণ এটা। বিজ্ঞান বলছে, ডায়াফ্রাম, পেটের, পিঠের এবং পাঁজরের মধ্যবর্তী পেশি শ্বাসবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
তবে জন্মগত ভাবে কণ্ঠ যতই সুরেলা হোক না কেন, তা দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখতে রেওয়াজ করে যাওয়া জরুরি। বিজ্ঞান বলছে, গান গাওয়ার সময় মস্তিষ্কের ডান দিক সক্রিয় হয়ে ওঠে। মনে শান্তি আনে গান। এমনকি গান গাইলে ক্যালোরিও খরচ হয়।