বাংলা হান্ট ডেস্ক: মাতৃত্ব, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে বেশ সংবেদনশীল ভারত। গর্ভপাত বৈধ হলেও তাতেও রয়েছে বেশ কিছু নিয়মকানুন এবং বিধিনিষেধ। গর্ভধারণ থেকে ২৪ সপ্তাহ অর্থাৎ ৬ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলে গর্ভপাত আইনত নিষিদ্ধ আমাদের দেশে। কিন্তু এবার বাংলার মাটি এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল। ৩৫ সপ্তাহের ভ্রুণের গর্ভপাতের রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আমাদের দেশে গর্ভপাত সংশোধন আইন ২০২১ অনুযায়ী ভ্রুণের ২৪ সপ্তাহ বয়স অবধি গর্ভপাত করা যায়। কিছু কিছু সময় মেডিক্যাল এমার্জেন্সির কারণে অবশ্য ২৪ সপ্তাহের পরও মেলে গর্ভপাতের অনুমতি। একমাত্র যদি শিশুটির কোনোরকম জীবন বিপন্ন করা অসুস্থতা থেকে থাকে এবং চিকিৎসকেরা যদি জানিয়ে দিয়ে থাকেন যে জন্মের পর আর কোনো মতেই বাঁচানো সম্ভব নয় তাকে তখনই এই বিশেষ অনুমতি দেয় আদালত। তবে গর্ভধারণের ৩৫ সপ্তাহ পর গর্ভপাতের অনুমতির নজির বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে এর আগে নেই।
জানা যাচ্ছে, বহুবছর বিয়ে হলেও সন্তান সুখে বঞ্চিত ছিলেন উত্তর কলকাতার ওই দম্পতি। অবশেষে দীর্ঘদিন পর যখন অন্তঃসত্ত্বা হলেন প্রথম কয়েক মাস ঠিকই ছিল সব কিছু। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবল। প্রায় ৩৪ সপ্তাহ অর্থাৎ গর্ভাবস্থার সাড়ে ৮ মাস চলাকালীন শিশুটির স্পাইনাল কর্ডে একটি গুরুতর সমস্যা লক্ষ্য করেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানিয়েই দেন জন্ম হলেও কোনোদিনই সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে না শিশুটি। এই কথা জানার পরই গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেন দম্পতি। কলকাতা হাইকোর্টে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে মামলা দায়ের করেন তাঁরা।
হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্তারের সিঙ্গেল বেঞ্চে হয় এই মামলার শুনানি। এসএসকেএম এর চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হয় রায়ের ক্ষেত্রে। গঠিত হয় বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ডও। অবশেষে বৃহস্পতিবার তৃতীয় শুনানিতে মিলল গর্ভপাতের অনুমতি। যদিও কোনো সমস্যা হলে সম্পুর্ণ দায় মায়ের উপরেই বর্তাবে এমনটা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।