বাংলাহান্ট ডেস্ক : তাঁর লাথিতেই সটান কচুবনে পড়েছিলেন জয়প্রকাশ। এবার সেই জয়প্রকাশের তৃণমূল যোগদানের খবরে কার্যতই আকাশ থেকে পড়লেন তৃণমূল কর্মী তারিকুল ইসলাম।
নদিয়ার থানারপাড়ার সেই দিনের স্মৃতি এখনও টাটকা বঙ্গবাসীর মনে। ২০১৯ এর করিমপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর তারিকুলের লাথি খেয়ে কচুবনে পড়েন তিনি। তখন রাজ্য বিজেপির দাপুটে নেতা ছিলেন তিনি। মাঝখানে কেটেছে মাত্র বছর আড়াই। এরই মধ্যে দল বদলে তৃণমূলে জয়প্রকাশ। কিন্তু সেই খবর পেয়ে যেন কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না তারিকুল ইসলাম। যাঁকে লাথি মেরে কচুবনে ফেললেন সেই তিনিই এখন একই দলের উচ্চপদস্থ নেতা তা মানতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে বৈকি তাঁকে।
বিএ পাশ হলেও বরাবরই রগচটা বলে কুখ্যাত তারিকুল ইসলাম। এবার বিজেপি নেতার তৃনমুল যোগদানের ঘটনায় স্তম্ভিত হবে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘উনি এখন আমাদের দলে! তাই নাকি!’ তবে সম্ভবত দলের কারণেই ব্যাপারটিকে বেশ ভালোই সামলে নিয়েছেন তিনি। জয়প্রকাশ মজুমদারের তৃণমূলে যোগ দানের কথা শোনার পরই তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে কোনওদিন দেখা হলে তাঁকে অনুরোধ জানাবো, যাতে সেই সব কথা আর মনে না রাখেন।’
জানুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদই ‘বিদ্রোহী’ জয়প্রকাশকে নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয় বিজেপির অন্দরে। ২৫ জানুয়ারি সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। কিন্তু তখন থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে থাকেন তিনি। কখনও বিজেপির রাজ্য কমিটি কখনও শুভেন্দু অধিকারী, একের পর এক লক্ষ্যে তোপ দাগতে থাকেন তিনি। পুরভোটের পরও তিনি মুখ খোলেন বিজেপির বিরুদ্ধেই। বেশ কিছুদিন ধরেই তৈরি হচ্ছিল তাঁর দলবদলের জল্পনা। সেসবে ইতি টেনে অবশেষে গতকাল অর্থাৎ ৮ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখালেন তিনি। তাঁর এই ঝান্ডা বদলে রাজ্য বিজেপি চরম অস্বস্তিতে পড়লেও তা স্বীকার করতে নারাজ।
প্রসঙ্গত, জয়প্রকাশের দল ছাড়ার আগের দিন রাতেই জয়প্রকাশ মজুমদার সহ একাধিক ‘বিদ্রোহী’ নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক সারতে দেখা যায় বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তবে তিনিও কি ‘অন্য কিছু’ ভাবছেন রাজনৈতিক জীবনে? আপাতত এই প্রশ্নতেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।