প্রেমের টানে ভারতে হাজির লন্ডনের যুবক! হিন্দু রীতি মেনে বাবা বৈদ্যনাথ ধামে সম্পন্ন হলো বিবাহ

প্রাচীন কাল থেকেই গোটা বিশ্বে ভারতীয় সংস্কৃতি এক গভীর প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। অতীতে একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বহু বিদেশি নাগরিকরা ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সনাতন ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এদেশে এসে বসবাস শুরু করেন। তবে সম্প্রতি, এসকল ঘটনাকেও ছাপিয়ে এক অসামান্য দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো ঝাড়খণ্ডের বাবা বৈদ্যনাথ মন্দির।

বৃহস্পতিবার ঝাড়খন্ড রাজ্যের দেওঘরে অবস্থিত বাবা বৈদ্যনাথ ধামে ধুমধাম করে এক অসামান্য বিবাহের আয়োজন করা হয়। ভগবান শিবের এই মন্দিরে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের বিবাহ সম্পন্ন হয়, তবে এদিনের এই অনুষ্ঠানটির তাৎপর্য অপরিসীম। ভারতীয় যুবতীর প্রতি ভালোবাসার টানে ভারতে পদার্পণ করে এদিন বিয়ে সারলেন লন্ডনের এক যুবক। আর তাদের এই বিবাহের সাক্ষী রইলো পরিবার সহ অসংখ্য মানুষ।

সূত্রের খবর, মেয়েটির পরিবার পূর্বে বিহারের ভাগলপুর জেলায় বসবাস করলেও পরবর্তীতে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ শহরে চলে আসেন। সাত বছর পূর্বে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে জেনা নামের ওই যুবতী লন্ডনে পাড়ি দেয়। পরিবার সূত্রে খবর, লন্ডনে এক টেলিকম কোম্পানিতে চাকরি করতে যায় সে এবং সেই সময়ে ওই কোম্পানিতেই কর্মরত লন্ডনের বাসিন্দা সেমের প্রেমে পড়ে জেনা। দীর্ঘসময় প্রেম চলার পর তারা একে অপরকে বিয়ে করতে চাইলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্ম। তবে এ ক্ষেত্রে সকল বাঁধাকে অতিক্রম করেই তারা একে অপরকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এরইমাঝে, 2020 সালে করোনা মহামারির কারণে পাসপোর্ট জনিত সমস্যায় ভারতে আসার সকল পথ তাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় এবং স্বভাবতই দীর্ঘ দুই বছর তাদের অপেক্ষা করে থাকতে হয়। তবে বর্তমানে পাসপোর্ট সমস্যা মিটতেই সেম, তার পরিবারসহ ভারতে পাড়ি দেয় এবং এদিন ধুমধাম করে বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরে জেনার সঙ্গে তার বিয়ে সম্পন্ন হলো। বিবাহ অনুষ্ঠানে পাত্র-পাত্রী এবং পরিবার সহ মোট 8 জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এই সময় জেনার বাবাকে ধরা হলে তিনি জানান, “মেয়ে খুশি হলেই আমরা খুশি। তবে সব থেকে বড় ব্যাপার হল, জেনা প্রথমে ভারতে আসতে চাইছিল না। কিন্তু বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরের নাম শুনতে সে তৎক্ষণাৎ ভারতে এসে উপস্থিত হয়। আমরা এই বিয়েতে খুব খুশি।” এছাড়াও মন্দিরের প্রধান পুরোহিত বলেন, “আমি এই ধরনের বিবাহ জীবনে এই প্রথমবার দেখলাম। তাছাড়া এক বিদেশি যুবক যেভাবে আমাদের দেশের সনাতন ধর্মকে আপন করে নিলো, তা অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার।”

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর