বাংলাহান্ট ডেস্ক: তাঁর লেখা মানেই বিতর্ক। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁর পোস্টে এসে ক্ষোভ উগরে দেন কিছু মানুষ। কিন্তু তাঁকে রোখা যায়নি, যাবেও না। তিনি লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় থাকেন তিনি। মানুষজনের কটাক্ষকে তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত রাখেন। সম্প্রতি তাঁর নিশানায় এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সহ আরো দুজন নারী।
নারী স্বাধীনতার হয়ে সুর চড়ানোর জন্যই মূলত মৌলবাদীদের রোষের শিকার হয়ে এসেছেন তসলিমা। আর আজ তাঁরই নিশানায় তিন নারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাম্প্রতিক একটি পোস্টে তিন জনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লেখিকা।
তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ময়মনসিংহ, ঢাকা, কলকাতা। এই তিনটে শহরে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ যাঁরা করেছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই নারী। খালেদা, হাসিনা, মমতা। আমি কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নারীর সমানাধিকারের পক্ষে আজ চার দশকের বেশি লিখছি। আমি কাউকে মারিনি, ধরিনি, কাটিনি। নারীর পক্ষে লিখি। মানবতার পক্ষে লিখি।
ওই তিন নারী যখন নারীর অধিকারের পক্ষে কথা বলেন, বাক স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেন, আর লোকেরা তাদের কথায় বেশ হাততালি দেয়, তাদের সুখ্যাতি গায়, আমার বড্ড হাসি পায়। আগে রাগ হতো, এখন হাসি পায়। সুখ্যাতি গাওয়া লোকদের কপটতা দেখে হাসি তো পাবেই। ওই নারী শাসকদের কথায় আজকাল হাসিও পায় না। দিনে দিনে এইটুকু বুঝেছি, সততা বলতে ওঁদের মধ্যে কিছু নেই। রাজনীতি করতে গেলে সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, সততা, সেটিকে ওরা অনেক আগেই সস্তায় বিক্রি করে দিয়েছে ।’
মৌলবাদীদের তোয়াক্কা না করে বরাবর উচিতের পক্ষে সুর চড়িয়েছেন তসলিমা নাসরিন। ভারতে হিজাব বিতর্ক নিয়ে সরব হয়েছিলেন লেখিকা। দাবি করেছিলেন, বোরখা হিজাবের মতো পোশাক মহিলারা স্বেচ্ছায় পরেন না। তাদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষদের নজর থেকে বাঁচার জন্য ঢেকেঢুকে রাখা হয় মেয়েদের, এমনি ভাষায় তোপ দেগেছিলেন তসলিমা।
পরবর্তীকালে বাংলাদেশে টিপ বিতর্ক নিয়েও ধর্মের ধ্বজাধারীদের একহাত নিয়েছিলেন লেখিকা। এমনকি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে তসলিমা দাবি করেছিলেন, ছবির গল্প যদি পুরোপুরি সত্য হয় তবে কাশ্মীরি হিন্দুদের অবিলম্বে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ থেকে যে হিন্দুদের বিতাড়িত করা হয়েছিল সেটা নিয়েও ছবি তৈরি করা উচিত বলে দাবি করেছিলেন তসলিমা।