তীব্র দাবদাহের মধ্যেও এক বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে ডিউটি, মহিলা কনস্টেবলকে কুর্নিশ গোটা দেশের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যখন একাধিকবার বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সবাই ঠিক সেই আবহেই এমন কিছু ঘটনা সামনে আসছে যা কার্যত চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, সমাজে পুলিশরাই রক্ষকের ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, তাঁরা আছেন বলেই সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে সমগ্ৰ সমাজব্যবস্থাই।

সম্প্রতি রাজস্থানের একটি ঘটনা সামনে এসেছিল। যেখানে আড়াই মাসের এক শিশুকন্যাকে স্তনদুগ্ধ পান করিয়ে তার জীবন বাঁচিয়েছিলেন কর্তব্যরত দুই মহিলা কনস্টেবল। এমনকি, তাঁদের এই কাজকে কুর্ণিশও জানিয়েছেন সমগ্ৰ দেশবাসী। ঠিক সেই রেশ বজায় রেখেই এবার এক আরও একটি ঘটনা সামনে এল। যেখানে দেখা গিয়েছে, তীব্র দাবদাহের মধ্যেও নিজের এক বছরের শিশু সন্তানকে কোলে নিয়েই কর্তব্যে অচল রয়েছেন এক মহিলা কনস্টেবল।

   

মূলত, উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে তীব্র গরমের মধ্যেই ওই মহিলা কনস্টেবলকে তাঁর সন্তানকে কোলে নিয়েই রাস্তায় ডিউটি করতে দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, যে ঐ মহিলা কনস্টেবলের নাম সোনিয়া। পাশাপাশি, তাঁর স্বামী আধাসামরিক বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। এমতাবস্থায়, তাঁর বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়িও নেই। যে কারণে শিশুটির দেখাশোনা করার জন্য বাড়িতে কেউ নেই তাঁর। আর ওই জন্যই বাধ্য হয়ে ছোট্ট সন্তানটিকে কোলে নিয়েই ডিউটি সারছেন তিনি।

গত ৩ মে অর্থাৎ মঙ্গলবার মোরাদাবাদে ভগবান পরশুরামের জন্মজয়ন্তীতে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। সেই সময়ও প্রচণ্ড রোদে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় ওই মহিলা কনস্টেবলকে। ডিউটির সময়ে সন্তানকে বেবি ক্যারিয়ারের মাধ্যমে বুকে ধরে রেখেছিলেন তিনি। সিভিল লাইন থানা এলাকায় কর্মরত ছিলেন সোনিয়া।

এদিকে, গত বুধবার বিষয়টি মোরাদাবাদের সিনিয়র পুলিশ সুপারের নজরে আসে। এমতাবস্থায়, সোনিয়াকে তাঁর সন্তানের যথাযথ যত্ন নেওয়ার জন্য এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সিভিল লাইন থেকে স্থানান্তরিত করে ভামা সারথি প্রকল্পের আওতায় রিজার্ভ পুলিশ লাইনে পরিচালিত প্লে-স্কুলের ডিউটিতে মোতায়েন করা হয়। যার ফলে তিনি এখন নিজের সন্তানের যথাযথ যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি প্লে-স্কুলে আসা অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের সন্তানকে পড়ানোর দায়িত্বও পালন করতে সক্ষম হবেন।

WhatsApp Image 2022 05 06 at 3.15.09 PM

এই প্রসঙ্গে সোনিয়া জানান, তাঁর স্বামী আধাসামরিক বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন এবং তাঁর বাড়িতে কেউ নেই। তিনি এখানে একা থাকার কারণে শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। বেশ কিছুদিন ধরেই সন্তানকে নিয়ে ডিউটি ​​করছেন তিনি। তবে প্রচণ্ড গরম থাকায় সমস্যা হয়। যদিও, তাঁর সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন বলেও জানান সোনিয়া।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর