বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিবিআই অফিসে হাজিরা এবং তার পরবর্তী প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে পরিস্থিতি। গতকাল সিবিআই দফতরে হাজিরার পরে এদিন সকাল হতেই পুনরায় একবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পার্থ। তবে এক্ষেত্রেও হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে হতাশার শিকার হলেন তৃণমূল নেতা। কি হলো এদিনের মামলার রায়?
গতকাল হাইকোর্ট দ্বারা খালি হাতে ফেরার পর এদিন অনেক আশা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে উপস্থিত হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর আইনজীবী। গতকালের প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকায় এদিন সবকিছু সঠিক করেই মাঠে নামেন তৃণমূল নেতা। আশা করা হয়েছিলো, হয়তো এবার সিবিআই তদন্তের হাত থেকে হাইকোর্ট দ্বারা রক্ষাকবচ মিলবে পার্থর গলায়; তবে শেষপর্যন্ত হলো তার ঠিক উল্টো। হাইকোর্টে ফের একবার ধাক্কা খেলেন তিনি।
এদিন মামলা থেকে শেষপর্যন্ত অব্যহতি চেয়ে নিলেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত। ফলে একপ্রকার খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে পার্থর মামলাটি কোন বিচারপতির বেঞ্চে উঠবে, তা ঠিক করবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। তবে সেক্ষেত্রেও কোনো আশার আলো নেই বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
সম্প্রতি এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে। এর পরেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। গত মাসে সিবিআই তদন্তের হাত থেকে সাময়িক স্বস্তি পেলেও গতকাল হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে নিজাম প্যালেসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন।
গতকালই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের প্রতি নির্দেশ দিয়ে জানায় যে, এসএসসি সংক্রান্ত সকল মামলা এবার থেকে তারাই শুনবে। সেই মতো সকল মামলা শোনার পর গতকাল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়ে জানান, “বর্তমানে সিবিআই যদি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, তারা করতে পারবে। এক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা না করা হলে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিতে পারবে গোয়েন্দা সংস্থা।” এছাড়াও তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গতকাল বিকালে নিজাম প্যালেসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন।
অভিজিৎ বাবুর এই রায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতার আইনজীবী ডিভিশন বেঞ্চে গেলেও পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকার কারণে বিচারপতিরা সেই মামলা শুনতে অস্বীকার করে এবং শেষ পর্যন্ত নিজাম প্যালেস যেতে বাধ্য হতে হয় পার্থকে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীকে এরপর দীর্ঘক্ষন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এমনকি, সূত্রের খবর অনুযায়ী, বর্তমানে উপদেষ্টা কমিটির বয়ানের সঙ্গে পার্থর বক্তব্য মিলিয়ে দেখছে সিবিআই আর সেই বয়ানে গরমিল থাকলে পুনরায় তাদের জেরার মুখে পড়তে হবে তৃণমূল নেতাকে। সেই কারণেই এদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি; তবে শেষপর্যন্ত ফের একবার হতাশাই সঙ্গী হলো পার্থর।
পুরো ঘটনায় এদিন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে যখন মানুষ কোন সমাধানের রাস্তা পায় না, তখন বিচার ব্যবস্থার ভূমিকাই প্রধান হয়ে দাঁড়ায়। মানুষের আশা-ভরসা, আবেদন সবকিছুই প্রতিফলিত হয় তাদের রায়ে। আমরা চাই, পার্থবাবুর হতাশা যেন আরও বাড়ে এবং দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পায়।”