বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি এসএসসি সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার মধ্যেই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গ। কয়েকদিন পূর্বে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস এই দুর্নীতি মামলায় এক নতুন নাম নিয়ে আসেন সামনে, সেই ‘রঞ্জন’ নামটি নিয়ে বর্তমানে উত্তাল হয়ে রয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। গতকাল এই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং রঞ্জন প্রসঙ্গে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কে এই রঞ্জন? তিনি কোনো কাল্পনিক চরিত্র কিনা তা তদন্ত করে দেখুক সিবিআই।” আর এবার কলকাতা হাইকোর্টে আবারও একবার উঠে এলো সেই প্রসঙ্গ।
জানা গিয়েছে, উপেন বিশ্বাস দ্বারা সামনে আনা নামটি কোনো কাল্পনিক চরিত্র নয়, এই রঞ্জন হল বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের এক ব্যক্তি, যার নাম চন্দন মণ্ডল। সম্প্রতি, প্রাথমিক টেট দুর্নীতির মামলা সংক্রান্ত কিছু তথ্য প্রকাশ করে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস আর সেখানেই তিনি তুলে ধরেন রঞ্জন প্রসঙ্গ। এমনকি সেই রঞ্জন আর্থিক তছরুপের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টে উঠে আসে এই বিষয়টি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পরবর্তীতে শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, “বাগদার বাসিন্দা চন্দন মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই এবং এক্ষেত্রে সহায়তা না করলে তাকে হেফাজতে পর্যন্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।” একই সঙ্গে প্রাক্তন সিবিআই কর্তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস অতীতে লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে এক মামলার তদন্ত করে তাঁকে গ্রেফতার পর্যন্ত করেন এবং বর্তমানে প্রাইমারি টেট দুর্নীতির মামলায় তাঁর এই পোস্টটি ঘিরে পুনরায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে উপেনবাবু বলেন, “আমি কাউকে ছাড়বো না। দোষীকে ধরার জন্য আদালত থেকে শুরু করে সিবিআই সবাইকেই পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, কে এই বাগদার রঞ্জন তথা চন্দন মণ্ডল? কি তার পরিচয়? আসলে, কয়েকদিন পূর্বে উপেন বিশ্বাস একটি ফেসবুক ভিডিওয় চন্দনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, ওই ব্যক্তি নাকি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে বেনিয়ম করত। এক্ষেত্রে যথাক্রমে সে দশ লক্ষ থেকে পনেরো-কুড়ি লক্ষ টাকা নিয়ে চাকরি বিক্রি করত। এমনকি একবার যদি কারো চাকরি পাওয়ার দায়িত্ব নিত সেই ব্যক্তি, তাহলে সেটা পাইয়েই ছাড়তো বলে অভিযোগ। পেশায় শিক্ষক চন্দন মণ্ডলের বাড়ি বর্তমানে তালা বন্ধ থাকলেও তার উদ্দেশ্যে তল্লাশি চালানো শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই বিতর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।