বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের বিস্তীর্ণ অংশে একাধিক রকমের চাষ (Farming)করা হয়। পাশাপাশি, দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন কৃষিকার্যের সাথে। এদিকে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চাষের ক্ষেত্রেও এসেছে একাধিক বৈচিত্র্য। শুধু তাই নয়, মানুষের চাহিদা এবং বাজারমূল্যের ওপর ভর করে অনেকেই প্রথাগতভাবে খাদ্যশস্যের চাষ না করে বিভিন্ন বিকল্প চাষের পথ খুঁজে নিচ্ছেন। আর তাতে মিলছে লাভও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একটি লাভজনক চাষের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যা খুব সহজেই শুরু করে হতে পারে ভালো উপার্জন।
মূলত, আজ আমরা কুলফা চাষ (Kulfa Cultivation) সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। পূর্ববর্তী সময়ে কৃষকরা কুলফা চাষ সম্পর্কে তেমন সচেতন ছিলেন না। পাশাপাশি, সবাই মনে করতেন যে, এই গাছগুলি যেকোনো জায়গায় আগাছা হিসেবেই জন্মায়। যদিও, ধীরে ধীরে মানুষ যখন এর ওষধিগুণ সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন থেকেই কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এই গাছের চাষ শুরু করেন।
ওষধিগুণে পরিপূর্ণ এই গাছ: জানিয়ে রাখি যে, কুলফার মধ্যে একাধিক ওষধিগুণ রয়েছে। এর পাতা ও ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্যারোটিনয়েডের খুব ভালো উৎস। এছাড়াও, এর ফলের মধ্যে রাইবোফ্লাভিন, পাইরিডক্সিন, ফোলেট ও নিয়াসিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
যেকোনো ধরণের মাটিতে এই চাষ করা যায়: এই গাছ চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা হল সব ধরণের মাটিতেই কুলফা চাষ করা যায়। এই চাষের জন্য বর্ষাকাল হল সবচেয়ে ভালো সময়। অর্থাৎ, জুলাই ও আগস্ট মাসে এই চাষ করে কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারেন।
এর ফল ক্যাপসুল আকৃতির হয়: উল্লেখ্য যে, কুলফা গাছের পাতাগুলি আকৃতিতে গোলাকার হয়। এছাড়াও, এর ফুল হয় হলুদ বর্ণের। এই ফুলগুলি পরে ফলে পরিণত হয়। এদের আকৃতি দেখতে অনেকটা ক্যাপসুলের মতো। উষ্ণ জলবায়ু এই উদ্ভিদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। কারণ, এই গাছগুলি ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেঁচে থাকতে পারে না।
৬ সপ্তাহের মধ্যে ফসল প্রস্তুত: এই চাষের ক্ষেত্রে বীজ রোপণের পর অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ থাকলে কুলফার বীজ ৪ থেকে ১০ দিনের মধ্যে অঙ্কুরিত হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, বীজ রোপণের প্রায় ১ মাস বা ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পরে এগুলি ফল সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। এই ফল বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা ভালো লাভ করতে পারেন। এর ওষধিগুণের কারণে অনেক কোম্পানি কৃষকদের কাছ থেকে এই গাছের পাতা ও ফল সরাসরি নিয়ে থাকে। পাশাপাশি, দিন দিন চাহিদা বাড়ছে এগুলির। আর এভাবেই এই চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা বড় অঙ্কের উপার্জন করতে পারবেন।