বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কয়লা কাণ্ড থেকে গরু পাচার দুর্নীতি মামলা; একের পর এক দুর্নীতিতে বিদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। একদিকে যখন গরু পাচার মামলায় সম্প্রতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI), আবার অপরদিকে কয়লা পাচার কাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দিকেও নজরে রয়েছে ইডির। এছাড়াও আরও বহু নেতা-মন্ত্রীরা তদন্তকারী অফিসারদের র্যাডারে আর এর মাঝেই এই ইস্যুতে এবার বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। তাঁর দাবি, “গরু কিংবা কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই বা ইডি যে কোনো সময়ে আমাকে জেলে ঢোকাতে পারে।” তাঁর এই মন্তব্যের পর ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিস্তর জল্পনা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গরু এবং কয়লা পাচার দুর্নীতি মামলায় অস্বস্তিতে শাসক। একের পর এক নেতা মন্ত্রীরা এই মামলায় জড়িত হয়ে পড়ায় ব্যাকফুটে তৃণমূল। অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর দুর্নীতি মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে উঠে আসছে আর সেই প্রসঙ্গটিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক উদয়ন গুহর দাবি, “গরু বা কয়লা পাচার মামলায় তদন্তকারী অফিসারের দল আমাকে কিংবা তৃণমূল কংগ্রেসের যেকোনো নেতা কর্মীকে কারাগারে ঢোকাতে পারে।” একইসঙ্গে গরু পাচার কাণ্ডে বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও এদিন বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল কোচবিহারের দিনহাটার চৌধুরীহাটে এক অনুষ্ঠানে যোগদান করে উদয়ন গুহ বলেন, “আমার একটা পা বাইরে রয়েছে আর একটা জেলের ভিতর ঢুকিয়েছি। যে কোন মুহূর্তে সিবিআই কিংবা ইডি আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দিতে পারে। এমনকি অন্যান্য তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।”
একই সঙ্গে গরু পাচার কাণ্ডে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, সীমান্তের কাছে কপিকলের সাহায্যে গরুদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছিলো। এভাবে যদি এক একটা গরুকে পাঠানো হয়ে থাকে, তবে প্রতিটি প্রাণীকে এপার থেকে ওপারে পাঠাতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগতে পারে। ফলে চারটে গরু পাঠাতেই লেগে যাবে এক ঘন্টা। আমার প্রশ্ন, যদি এত সময় ধরে গরু পাচার করা হয়ে থাকে, তবে বিএসএফ কিছু জানলো না কেন?”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে গরু পাচার মামলা একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলেছে। বিশেষত, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকে শাসক দলকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা মন্ত্রীর জড়িত থাকার বিষয়েও দাবি করে চলেছে সিপিএম ও বিজেপির মত দলগুলি। আবার অপরদিকে, সিবিআই এবং ইডির মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। সব মিলিয়ে দুর্নীতি ইস্যুকে কেন্দ্র করে শোরগোল সর্বত্র আর এর মাঝেই উদয়ন গুহর মন্তব্য সেই বিতর্ক আরো উস্কে দিল বলেই মনে করছেন রাজ্যবাসীরা।