বাংলাহান্ট ডেস্ক : হিজাব বিতর্ক নিয়ে মাঝেমধ্যেই উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এজলাসেও। এদিনও তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় হিজাব মামলার শুনানির সময়। এই মামলায় ধর্মই মুখ্য ভূমিকায় রয়েছে বলে দাবি করছেন অনেকেই। এরই মধ্যে প্রস্তাব করা হয়, সমস্ত মামলাকে যেন ধর্মের দৃষ্টিতে না দেখা হয়।
কর্নাটকের হিজাব বিবাদকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার ছিল সেই মামলারই শুনানি। এই শুনানিতেই বারবার সামনে আসে বিবাদ-বিতর্ক। এএসজি নটরাজন এদিন বলেন, সমস্ত বিষয়কে ধর্মের সঙ্গে যুক্ত করা ঠিক নয়। ধর্মের নাম দিয়ে কোনও জিনিসকে নিজের অধিকার বলাটাও অনুচিত। তিনি আরও বলেন ‘সমস্ত ধার্মিক অধিকারকেই একটা ভারসাম্যে রাখা উচিত। কেউ বলতে পারে না যে এটা আমার পূর্ণ অধিকার। এই মামলা একটি বিশেষ সংস্থার নিয়ম এবং অনুশাসনের উপর দায়ের করা সাধারণ একটি মামলা। কোনও বিশেষ ধর্ম বা ব্যক্তির উপর পক্ষপাত করা হয়নি। সবাইকেই সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। কাল কেউ একথা বলতেই পারে বোরখা তাঁর পূর্ণ অধিকার। তারপর বিমানবন্দরে ঢুকে তিনি দাবি করতেই পারেন যে আমি আমার মুখ দেখাব না।’ এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন ইন্ডিয়া গেটে কি কোনও হিন্দু গিয়ে যজ্ঞ করতে পারেন?
এরপরই বিচারপতি ধুলিয়া বলেন, ‘আপনি কি মুসলিম মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দিতে চাইছেন?’ এই প্রশ্নের উত্তরে নটরাজন পরিস্কার জানান, সঠিক পোশাক পরে তারা স্কুলে আসতেই পারে। এরপর ধুলিয়া প্রশ্ন তোলেন,’তারমানে হিজাব পরে স্কুলে এলে আপনি ঢোকার অনুমতি দেবেন না?’ এর উত্তরে নটরাজন বলেন, ‘এটা স্কুল ঠিক করবে। রাষ্ট্র হিসাবে আমরা সবায়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।’
প্রসঙ্গত, ক্লাসরুমে হিজাব পরে এলে পড়ুয়াদের মধ্যে বৈচিত্র্য তৈরি হবে, বুধবার এমনটাই মত দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ধর্মীয় পরিচিতি নিয়ে সকলে বেশি সচেতন হয়ে পড়বে, এমন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে। কর্ণাটক সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্কুলের ইউনিফর্মের সঙ্গে হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া যাবে না। সেই মামলা প্রসঙ্গেই এই মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা ও সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে হিজাব মামলার শুনানি চলছে। সেখানেই কর্ণাটক সরকারের দাবির প্রেক্ষিতে বিচারপতিদের বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, “হিজাব পরে আসার অনুমতি দিলে ভারতের বৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে পড়ুয়ারা। তাছাড়া ধর্মীয় পরিচিতি নিয়েও তারা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল থাকতে পারবে।” কর্ণাটক সরকারের তরফে বলা হয়, সমস্ত রকম ভেদাভেদ থেকে দূরে রাখা উচিত পড়ুয়াদের।