বাংলাহান্ট ডেস্ক : গরু পাচারে মামলায় (Cow Smuggling) মূল অভিযুক্ত এনামুল হক ধরা পড়ে অনেক আগেই। তার পর তাঁর তিন ভাগ্নের দিকেও নজর ঘোরে তদন্তকারী আধিকারিকদের। তিন ভাগ্নের অফিস, চালকল ও হোটেলে তল্লাশি চালানো হয়। উদ্ধার হয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি। তাদের এইসব বিরাট ব্যবসার আয়ের উৎস কী, সে নিয়েও ওঠে একাধিক প্রশ্ন। তবে তল্লাশি চালানোর পর থেকেই নিঁখোজ তিনজনই। তদন্তকারীরা মনে করছেন তারা হয়ত বিদেশে পালিয়ে যেতে পারে। সিআইডির আবেদনের ভিত্তিতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর আদালত।
এনামুলের তিন ভাগ্নের বিপুল অর্থের উৎস জানার জন্য তাঁদের সংস্থার কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সূত্রের হদিশ পায়নি সিআইডি। ওই টাকার উৎস খুঁজতে তাঁদের বিভিন্ন অফিসে পাওয়া নথি ও তথ্য খতিয়ে দেখছেন সিআইডি-র তদন্তকারী আধিকারিকরা। জানা গেছে, এনামুলকে গ্রেফতার করার পর থেকে তাঁর সমস্ত ব্যাবসার (Cow Smuggling) দেখাশোনা করত ওই তিন ভাগ্নেই। মুর্শিদাবাদে তাদের চালকল, মার্বেলের দোকান এবং হোটেলের ব্যবসা রয়েছে। এছাড়াও আরও অনেকরকম ব্যবসাই তাদের আছে বলে জানা যাচ্ছে। সিআইডি দাবি, কলকাতার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের অফিস ছাড়াও অন্যত্র প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে।। সেগুলি উদ্ধার করার চেষ্টাই এখন করছেন আধিকারিকরা।
বাংলায় গরু পাচার নিয়ে বিগত দু’তিন বছর উঠে এসেছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই মামলায় জড়িয়েছে রাজ্যের একাধিক রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর নামও। মূল অভিযুক্ত হিসেবে এই মামলায় নাম ছিল এনামুল হকের। গরু পাচার-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তদের মধ্যে এনামুল হককে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করে ইডি। এনামুল এই মুহুর্তে এখন দিল্লির তিহাড় সংশোধনাগারে বন্দি। দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি এনামুলকেও জেরা করতে চান সিআইডি-র তদন্তকারীরা। এই বিষয়েও আদালতে আবদেন করা হয়েছিল। আদালত তা মঞ্জুর করেছে। সামনের সপ্তাহে সিআইডি-র একটি দলের দিল্লি গিয়ে তাঁকে জেরা করার কথা। তদন্তকারীরা জানান, জেরার পরে প্রয়োজন হলে এনামুলকে সিআইডি-র হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হতে পারে।
সিআইডি সূত্রের খবর, দু’সপ্তাহ ধরে ওই তিন ভাইয়ের মার্বেলের দোকান, চালকল এবং কলকাতার বিভিন্ন অফিসে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। উদ্ধার হয় বিপুল নথি। অভিযোগ, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও তাঁরা আসেননি। তার পরেই সিআইডি-র তরফে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয় এবং আদালত তা মঞ্জুরও করে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ওই তিন জন আরব আমিরশাহিতেই পালিয়েছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দিকে এগোনো হবে।