বাংলাহান্ট ডেস্ক : হিজাব বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ইরান। এবার টেলিভিশন হ্যাকারদের হামলায় সেই আন্দোলনে যোগ হলো নতুন মাত্রা। গত শনিবার রাতে একটি খবর সম্প্রচারের অনুষ্ঠানকে টার্গেট করলো ইরানের একটি হ্যাকার সংস্থা।ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর মুখে চাঁদমারি চিহ্নের সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা যুক্ত করে কড়া হুমকি দিলেন হ্যাকাররা।
সূত্রের খবর, গত শনিবার একটি সংবাদ সম্প্রচার অনুষ্ঠান চলাকালীন হঠাৎই দেখা যায় খামেনেই একটি বৈঠক করছেন প্রশাসনিক কর্তাদের সাথে। ওই অনুষ্ঠান চলাকালীন সম্প্রচারে ওপর দখল নেন কিছু হ্যাকার। সুপার ইম্পজ করে হ্যাকাররা খামেনেইরের মুখের উপর বসিয়ে দেন চাঁদমারির চিহ্ন। তার পিছনে জ্বলতে থাকে আগুনের লেলিহান শিখা। এরই সাথে কয়েকটি লাইন ফুটে ওঠে টেলিভিশনের পর্দায়। তাতে লেখা,”যোগদান করুন আমাদের সাথে, প্রতিবাদে সামিল হন।”
খামেনেইরেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা ফুটে ওঠে,”আপনার হাতে লেগে আছে যুবসমাজের রক্ত। আপনার আসবাবপত্র সরানোর সময় এসে গেছে পাস্তুর স্ট্রিটের অফিস থেকে। ইরানের বাইরে নিজের পরিবারের জন্য জায়গা খুঁজে নিন।” এই সম্প্রচার চলাকালীন ফুটে ওঠে অন্য আরও একটি দৃশ্য। সেখানে দেখা যায়, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে মৃত তিন মহিলা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদের সাথে সাদাকালো ভাবে ফুটে ওঠে মাহশার মুখও।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ ই সেপ্টেম্বর মাঝ রাস্তায় মাহশার গাড়ি আটকায় পুলিশ। এরপর তাকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। অভিযোগ থানায় ইরানের নীতি পুলিশ অকথ্য অত্যাচার চালায় মাহশার উপর। এরপর ১৬ ই সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাহশার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে ইরানের মত রক্ষণশীল ইসলামিক দেশে তিনি মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক বিধি লঙ্ঘন করছেন।
এই ঘটনার প্রতিবাদে ইরানের রাস্তায় অগণিত মহিলা সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আন্দোলনে নামে। ইরান ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশের ছড়িয়ে পড়ে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলির দাবি এখনো পর্যন্ত এই ঘটনার ফলে ১৩৩ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু ঘটেছে। অভিনব এই টেলিভিশন হ্যাকিং এর ঘটনা সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। ইরানের ইদালত-ই আলি নামের হ্যাকারদের একটি সংস্থা এই হ্যাকিংয়ের দায় স্বীকার করেছে।